ভারতের একাধিক রাজ্যে টানা বর্ষণে কারণে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। শুধুমাত্র রাজস্থানেই গত ২৪ ঘণ্টায় টানা বৃষ্টির কারণে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে রাজ্যটির কোটা, পালি, জালোর ও ধৌলপুর জেলাজুড়ে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।
গত সোমবার কোটায় রেকর্ড ১৯৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। চম্বল নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কোটা ব্যারাজের ১২টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
চলমান বন্যায় চম্বল নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে সাতজন নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে একজনকে উদ্ধার হলেও বাকিরা এখনো নিখোঁজ।
অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশের জবলপুর ও রেওয়াসহ ১০টি জেলা টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে। জানা গেছে, নর্মদা নদী বিপদসীমার উপরে বইছে। শেওপুরের বিভিন্ন গ্রাম, দোকানপাট ও হাসপাতাল জলের নিচে ডুব আছে। পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
একই পরিস্থিতি উত্তরপ্রদেশের লখনউ, কানপুর, বেরেলি-সহ ১৫টি শহরে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে মারাত্মক জলাবদ্ধতা। বাঁধ উপচে পড়ায় ললিতপুরে গোবিন্দ সাগর বাঁধের ১৭টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে চিত্রকূটে নির্মিত ৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি সেতুর সংযোগ সড়ক উদ্বোধনের আগেই বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে, যা প্রশ্ন তুলেছে নির্মাণের গুণগত মান নিয়ে।
গত কয়েকদিন হিমাচল প্রদেশে অব্যাহত রয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি, ভূমিধস ও বন্যা।
রাজ্যটিতে গত ২৪ দিনে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখনো ২০০টিরও বেশি রাস্তা অবরুদ্ধ রয়েছে।
মানালি-চণ্ডীগড় মহাসড়ক তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভূমিধসের কারণে, যা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশে লাল সতর্কতা (রেড অ্যালার্ট) জারি রয়েছে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টির মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রশাসন জনগণকে নিরাপদে থাকার ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।