ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫

পদ্মার পানি কমলেও রয়ে গেছে দুর্ভোগ

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৭:১৮ এএম

পদ্মা নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলেও উদ্বেগ কাটেনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের বানভাসি মানুষের। এখনো অনেক বসতঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কৃষি জমি পানিতে নিমজ্জিত। পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন হাজারো পরিবার। পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকটে দুশ্চিন্তায় কৃষক-খামারিরা। কাজকর্মে ফিরতে না পারায় বিশেষ করে নি¤œআয়ের মানুষদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।

জানা যায়, রাজশাহী বাঘার পদ্মার চরাঞ্চলে এবার বন্যার পানিতে ১ হাজার ৭০০ বিঘা জমির আবাদি ফসলসহ গোচরণভূমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বেড়ার অর্ধেক পানিতে ডুবে যায় লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে চকরাজাপুর ও গড়গড়ি ইউনিয়নের ২ হাজার ৪০০ পরিবার।

আতারপাড়া গ্রামের সুমন হাওলাদার বলেন, পানি কমলেও তার মতো গ্রামের বেশকিছু পরিবারের ঘরের পানি এখনো নামেনি। মহিদ ঢালী, ইব্রাহীম হাওলাদার, জবলু কাজিসহ কয়েকজন জানান, ভারি বৃষ্টিপাত থেমে নেই। এতে ঘর থেকে বের হতে পারছি না।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল হাওলাদার জানান, আতারপাড়া গ্রামে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা শতাধিক। পানি কমলেও কোথাও কোথাও ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে তার এলাকার পানিবন্দি মানুষকে সহায়তা করেছে।

ইউনিয়নটির সংরক্ষিত (৭.৮.৯) ওয়ার্ডের নারী সদস্য রুনিয়া খাতুন বলেন, ৩০ হাজার টাকা হিসেবে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ভুট্টার আবাদ করেছিলাম। বিঘা প্রতি ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বন্যায় ডুবে সব শেষ।

৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সহিদুল ইসলাম বলেন, চাহিদা অনুপাতে সবাইকে এখনো সহায়তা দেওয়া যায়নি। পরে সহায়তা পেলে, বাদ পড়াদের আগে দেওয়া হবে। বেসরকারিভাবেও সহায়তা দিচ্ছেন বলেন জানান তিনি।

এদিকে, চকরাজাপুর ইউনিয়নের- পলাশী ফতেপুর, কালিদাসখালী, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, দিয়াড়কাদিরপুর, লক্ষ্মীনগর ও গড়গড়ি ইউনিয়নের কড়ারি নওশারা, খানপুর গুচ্ছগ্রাম, আশরাফপুর ও খানপুর নিচপাড়াসহ ১০ গ্রামের ২ হাজার ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ভাঙনের ঝুঁকিতেও রয়েছে, চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ চারপাশে ৫০টি পরিবার।

স্থানীয়রা জানান, ৫০ বিঘা পেয়ারাবাগান, ৩০০ বিঘা কাউন, ৪০০ বিঘা আউস ধান, ২০০ বিঘা ভুট্টা, ৫০০ বিঘা পেঁপে  ও ২০০ বিঘা কলাবাগানসহ আখ খেত জলমগ্ন হয়ে সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, বন্যায় আক্রান্তদের সহায়তা করা হচ্ছে। চৌমাদিয়া গ্রামের ২২০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল ও খানপুর গুচ্ছগ্রামের ৮৫ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বাকিদের দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। মানুষের দুর্ভোগ কমে যাবে।