ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

অবরোধে অচল মোংলা, বন্দরে পণ্য পরিবহন বন্ধ

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০২:৩২ এএম

বাগেরহাট-৪ আসন বিলুপ্তি ও বাগেরহাট-৩ আসন বিভাজনের প্রতিবাদে জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি। গতকাল রোববার ভোর ৫টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ চলে ৫টা পর্যন্ত। অবরোধের কারণে সড়ক ও নৌপথে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে য়ায়। অচল হয়ে পড়েছে ইপিজেড, শিল্প-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, খেয়া ও ফেরি পারাপার। বন্দর জেটির কার্যক্রম ও সড়কপথে পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, আসন পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল বাগেরহাটের কাটাখালী, নওয়াপাড়া, দিগরাজ, সাইনবোর্ড, মোল্লাহাট, ফকিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে সর্বদলীয় সর্বাত্মক অবরোধ করা হয়। গতকাল ভোর থেকেই রাস্তায় নেমে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। ফলে জেলায় কোনো দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি। অভ্যন্তরীণ যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মাকরুজ্জামান বলেন, ‘বন্দরের চ্যানেলে বর্তমানে ৮টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ রয়েছে। বন্দরের বহির্নোঙরে যেসব জাহাজ রয়েছে, সেগুলোতে পণ্য বোঝাই-খালাস চলছে। তবে অবরোধের কারণে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। আর এই মুহূর্তে বন্দরের জেটিতে কোনো জাহাজ নেই। তবে আমাদের বন্দরের অফিসের কার্যক্রম চলছে।’

মোংলা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. জুলফিকার আলী বলেন, ‘অবরোধ সফল করতে ভোর থেকেই মোংলা নদীর খেয়া ও ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ইপিজেড কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ থাকায় শিল্প-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি অফিস কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। শুধু জরুরি সেবা চালু রয়েছে। বাগেরহাট থেকে খুলনা-মাওয়া-ঢাকা রুটও বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে কার্যত সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাগেরহাট।’

বাগেরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইসির হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। এ ইস্যুতে সোমবার ইসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বাগেরহাটবাসী। আশা করি, ইসি তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণা-বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, ‘ইসি রাতের অন্ধকারে জনগণের মতামত ছাড়াই আসন বিলুপ্তি ও বিভাজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা কোনোভাবেই মানবে না বাগেরহাটবাসী। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। তবে দাবি না মানা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন (ইসি) বাগেরহাট-৪ আসন বিলুপ্তি ও বাগেরহাট-৩ আসন বিভাজনের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে গাজীপুরে একটি আসন বৃদ্ধি করা হয়। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৩০ জুলাই থেকে বাগেরহাটে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে।