কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙনে সীমান্তে স্থাপিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি বিওপি বিলীন হয়ে গেছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার সর্বশেষ সীমান্তঘেঁষা উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ নদীতে বিলীন চলে যায়। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়া-৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিজিবি কুষ্টিয়া-৪৭ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ উদয়নগর বিওপিসংলগ্ন পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে আকস্মিক ভাঙন দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে বিওপির ৭০ শতাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে শুধু একটি ওপি পোস্ট, সিগন্যাল টাওয়ার, গোলঘর ও এমটি গ্যারেজ ছাড়া অন্য সব স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট অংশও যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি বিবেচনা করে গত বৃহস্পতিবার উদয়নগর বিওপি হতে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পার্শ্ববর্তী চরচিলমারী বিওপিতে স্থানান্তর করা হয়।
তিনি আরও জানান, বিজিবি সদস্য ও সরঞ্জাম সরিয়ে নিলেও সীমান্ত সুরক্ষার স্বার্থে উদয়নগর বিওপিসংলগ্ন এলাকায় কোনো ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হয়নি। এরই মধ্যেই সেখানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। বিদ্যমান বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোট ও রেসকিউ বোট ব্যবহার করে টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি উদয়নগর বিওপির নিকটবর্তী বিকল্প স্থানে নতুন বিওপি নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেন, তিন মাস আগের পর্যবেক্ষণে পদ্মা-গড়াই নদ-নদীর অন্তত ১৭টি স্থানে ভাঙনের ঝুঁকি আছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এ বছর পানি বাড়ার সঙ্গে সেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। বর্তমানে পানি কমছে, আর এতে ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনকবলিত এলাকার মধ্যে দৌলতপুরের উদয়নগর বিওপি ছিল অন্যতম। সেখানে জিওব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও ভাঙনের তীব্রতায় তা কাজে আসেনি।
বিজিবি সূত্র জানায়, সীমান্তঘেঁষা উদয়নগর বিওপিতে ২২ থেকে ২৫ জন সদস্য থাকতেন। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বিওপির বেশির ভাগ অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। অবশিষ্ট অংশও কয়েক দিনের মধ্যে ভেঙে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাউবোর কুষ্টিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, গতকাল সকালে উদয়নগর বিওপি এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি দেখা হয়েছে। পানি কমায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। বিওপিটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। দৌলতপুর ও ভেড়ামারার আরও কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন