বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় নিন্মমানের মরিচের বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বীজ কোম্পানি ‘সিয়াম সিডস’-এর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারি মালিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিকট লিখিত অভিযোগ দেন।
জানা যায়, উপজেলার মোস্তাইল এলাকার ‘আশিক কৃষি নার্সারির মালিক মো. আরিফুল ইসলাম গত আগস্ট মাসে কামারপাড়ার ফারুক নার্সারির প্রোপাইটার ফারুক হোসেনের কাছ থেকে ‘সিয়াম সিডস’ কোম্পানির প্রায় ৫ লাখ টাকার মরিচের বীজ ক্রয় করেন। পরে তিনি বীজ রোপণ করে বিক্রয়ের জন্য চারা উৎপাদন করেন। দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকরাও ওই নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ করেন।
কিছুদিনের মধ্যে কৃষকরা অভিযোগ করতে শুরু করেন, এসব চারা থেকে উৎপন্ন গাছে অকালেই ফুল আসছে, মিশ্র জাতের মরিচ উৎপাদন হচ্ছে এবং অনেক গাছ অজানা কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে বীজের নি¤œমান স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিষয়টি জানার পর ফারুক হোসেন নিজেও বীজের মান খারাপ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে চারা তুলে ফেলার পরামর্শ দেন।
বর্তমানে ‘আশিক কৃষি নার্সারিতে প্রায় ১০ লাখ অবিক্রীত চারা পড়ে আছে, যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৮ লাখ টাকারও বেশি বলে দাবি করেছেন মালিক আরিফুল ইসলাম। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ওই বীজ থেকে চারা নিয়ে রোপণ করা প্রান্তিক কৃষকরাও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, যা মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারি মালিক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি সারা বছরের পুঁজি ও কিস্তির টাকা তুলে চারা উৎপাদন করেছি। এখন সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ এই প্রতারণার সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, এভাবে নি¤œমানের বীজ বিক্রি চলতে থাকলে কৃষকরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কৃষি অফিসের কঠোর নজরদারি জরুরি।
অভিযোগের বিষয়ে ‘সিয়াম সিডস’-এর স্বত্বাধিকারী ফারুক হোসেন বলেন, আশিক কৃষি নার্সারির মালিক আরিফুল ইসলাম আমার দুলাভাই। এ বছর বীজে কিছু সমস্যা হয়েছে। এ জন্য আমি তাকে ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি।
শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনা খাতুন জানান, সিয়াম সিডসের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।