ঢাকা শনিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৫

স্বাস্থ্য সহকারীর ‘সুপার পাওয়ার’

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৫, ০১:৩২ এএম
  • স্বাস্থ্য সহকারী বকুল আলম একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে আছেন
  • স্টোর, কম্পিউটার, পরিসংখ্যান ও স্যানিটারি কাজেও তার একক দাপট
  • সরকারি মোটরসাইকেল ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে
  • দুদকের অভিযানে অনিয়ম ধরা পড়লেও এখনো কার্যকর ব্যবস্থা হয়নি

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী বকুল আলমের বিরুদ্ধে একাধিক পদ অবৈধভাবে দখলে রেখে ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের পদসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু দায়িত্ব তিনি প্রাক্তন প্রধান অফিস সহকারী মাইজুল হকের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করে আসছেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।

২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য সহকারী পদে যোগ দেন মো. বকুল আলম। বিধি অনুযায়ী তার দায়িত্ব টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) পরিচালনায় সীমাবদ্ধ থাকার কথা থাকলেও তিনি অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, স্টোরকিপার ও পরিসংখ্যানবিদের দায়িত্ব দখল করে রেখেছেন বলে জানা গেছে।

স্টোরকিপার জান্নাতুন ফেরদৌস দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও হাসপাতালের ওষুধ, স্যালাইনসহ সব মালামালের হেফাজত দেখাশোনা করেন বকুল আলম। এতে রোগীরা সময়মতো ওষুধ না পাওয়া ও মালামাল সরবরাহে বিঘেœর অভিযোগ করেছেন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ৩ জন কর্মরত থাকলেও অফিসিয়াল চিঠিপত্র সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রেরণের কাজও তিনি এককভাবে করে থাকেন।

এ ছাড়া পরিসংখ্যানবিদ পদে কর্মরত আরমিনা খাতুন থাকলেও বকুল আলম নিজেই পরিসংখ্যানের কাজ করেন। স্যানিটারি ইন্সপেক্টর না হয়েও তিনি বিভিন্ন হাটবাজারে পরিদর্শন করে দোকানদারদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। ফলে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

অভিযোগ আরও রয়েছে, তিনি হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বরাদ্দ সরকারি মোটরসাইকেল (রেজি. নং: ঠাকুরগাঁও হ-১১-৫০৪৯) ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন।

গত ২৮ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায়। এ সময় প্রাক্তন অফিস সহকারী মাইজুল হকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের প্রমাণ মেলে। পরে তাকে রাণীশংকৈল হাসপাতালে বদলি করা হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বকুল আলম বলেন, ‘জনবলসংকটের কারণে হাসপাতালের টিএইচএর দেওয়া দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন মাত্র। এখন ওই সব পদে লোক আসায় আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন ছেড়ে দিয়েছি।’

পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল জব্বার বলেন, এ হাসপাতালে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে কেউ না থাকায় বকুল আলম নিজেকে সে পদে পরিচয় দিয়ে মোবাইল কোর্টে হাজির থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি ওই পদে নিয়োজিত নন।