সর্বশেষ আট ওয়ানডের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সেই হতাশা কাটিয়ে উঠতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজকে সামনে রেখে আত্মবিশ্বাসের জায়গায় ফিরতে চেয়েছিল টাইগাররা। সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর দলটি চেয়েছিল সেই মোমেন্টাম ধরে রাখতে। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতার পুরনো রোগ আবারও ফিরে আসায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে হার মানতে হয় মেহেদী হাসান মিরাজের দলকে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। উইকেট ছিল রান করার মতোই। কিন্তু শুরুতেই টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে জীবন পেয়েও তানজিদ তামিম আউট হন মাত্র ১০ রানে। এরপর দ্রুত সাজঘরে ফেরেন সদ্য ওয়ানডে নেতৃত্ব হারানো নাজমুল হোসেন শান্ত, করেন মাত্র ২ রান। ওয়ানডে অভিষেকেই ওপেন করতে নামা সাইফ হাসান কিছুটা লড়াই করলেও ৩৭ বলে ৫ চারে ২৬ রান করে আউট হন তিনিও।
চাপের মধ্যে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে সামাল দিতে এগিয়ে আসেন তাওহীদ হৃদয় ও অধিনায়ক মেহেদী মিরাজ। তারা গড়েন ১০১ রানের কার্যকরী জুটি। হৃদয় ৮৫ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন, যাতে ছিল ৩টি ছক্কা ও ১টি চার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে। মিরাজ করেন ৮৭ বলে ৬০ রান, ১টি করে চার ও ছক্কা মারেন তিনি। কিন্তু এই জুটির পর কেউই ইনিংস টানতে পারেননি।
লোয়ার মিডল অর্ডার থেকে আর কোনো ব্যাটারই দাঁড়াতে পারেননি। জাকের আলী করেন ১০ রান, প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডেতে ফেরা নুরুল হাসান সোহান ফিরেন মাত্র ৭ রানে। তানজিম সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান এবং তানভীর ইসলাম করেন ১১। শেষ পর্যন্ত ৪৩.৫ ওভারে ২২১ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান দেখে-শুনে শুরু করে। ইব্রাহিম জাদরান ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ মিলে গড়েন ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি। বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম ফেরান ইব্রাহিমকে (২৩)। এরপর তানজিম সাকিবের শিকার হন সাদিকুল্লাহ আতাল (২)। বাংলাদেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও সেটি থেমে যায় গুরবাজ ও রহমত শাহর ৭৮ রানের জুটিতে।
রহমত শাহ ৭০ বলে করেন ৫০ রান, ইনিংসে ছিল দুটি চার। গুরবাজও তুলে নেন অর্ধশতক, ৭৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ৫০ রান করেন তিনি। দুজন পরপর আউট হলেও ম্যাচ আফগানদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বাকি পথটা সহজেই পার করে দেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদী ও আজমতুল্লাহ ওমরজাই।
শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ওমরজাই ৪০ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৪ রান করে আউট হন। শহিদী অপরাজিত থাকেন ৩৩ রানে। ৪৭.১ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২২৫ রান তুলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান।
এই জয়ের মাধ্যমে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান। সিরিজে টিকে থাকতে হলে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার, একই ভেন্যুতে।
বাংলাদেশ– ২২১ অলআউট (৪৩.৫ ওভার)- তাওহীদ হৃদয় ৫৬ (৮৫ বল, ৩ ছক্কা, ১ চার), মেহেদী মিরাজ ৬০ (৮৭ বল, ১ চার, ১ ছক্কা), ফারুকি ৩/৪৫
আফগানিস্তান– ২২৫/৫ (৪৭.১ ওভার)- গুরবাজ ৫০ (৭৬ বল), রহমত শাহ ৫০ (৭০ বল), ওমরজাই ৪৪ (৪০ বল, ৬ চার, ১ ছক্কা)
ফল: আফগানিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী