তাড়াইলের আলোচিত আনোয়ার ফকির হত্যা মামলার রায়ে একমাত্র অভিযুক্ত ইসলাম উদ্দিন মেম্বারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদ-, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদ- ও দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ নূরুল আমিন বিপ্লব এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি ইসলাম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত আনোয়ার ফকির তাড়াইল উপজেলার উত্তর ধলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মৃত. ফজলুর রহমান ফকিরের ছেলে। আর যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ইসলাম উদ্দিন মেম্বার একই উপজেলার তেউরিয়া গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, আনোয়ার ফকিরের মামাতো ভাই আপেল মাহমুদকে নৌবাহিনীতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ইসলাম উদ্দিন মেম্বার ২০১৮ সালে পাঁচ লাখ টাকা নেন। পরে চাকরি না হওয়ায় তিনি আংশিক টাকা, দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি অর্থ ফেরত চাইতে গিয়েই ঘটেছিল মর্মান্তিক সেই ঘটনা।
২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তেউরিয়া বাজার মোড়ে ‘মা মেডিকেল হল’-এর সামনে বাকি টাকা চাইলে ইসলাম উদ্দিন মেম্বার আনোয়ার ফকিরকে বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন, নিহতের ছোট ভাই আখলাকুল ফকির বাদী হয়ে তাড়াইল থানায় ইসলাম উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তভার পায় পিবিআই, এবং তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ। ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ অবশেষে এ মামলার রায় দিয়েছেন আদালত।
কিশোরগঞ্জ জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষার পর এই রায়ে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এটা একটি স্পষ্ট বার্তা, প্রতারণা ও হত্যা করে কেউ পার পাবে না।’
