ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

ভাবি হত্যার সাজা খেটে ফিরেই ভাতিজিকে হত্যা

বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০১:৫৫ এএম

বরগুনার তালতলীতে ভাবিকে গলা কেটে হত্যার ১০ বছর পর এবার ভাতিজি নাহিল আক্তারকে (৬) পিটিয়ে হত্যা করেছেন চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খান (২৭)। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ইদুপাড়া গ্রামে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। নিহত নাহিল ওই এলাকার দুলাল খানের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে নাহিল আক্তার বাড়ির সামনে দোকানে বিস্কুট কিনতে যায়। সেই সময় হঠাৎ পেছন থেকে চাচা হাবিল কাঠের লাঠি দিয়ে শিশুটির মাথায় ও হাতে সজোরে আঘাত করে। এতে গুরুতর জখম হয় নাহিল। স্থানীয়রা ও পরিবারের সদস্যরা দ্রুত উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। তবে বরিশালে নেওয়ার পথে শিশুটি রাত ৮টার দিকে মারা যায়। ঘটনার পর স্থানীয়রা ঘাতক হাবিল খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশে সোপর্দ করে।

স্থানীয়রা আরও জানান, ঘাতক হাবিল ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে তার বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেছিল। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। শিশু আইনে তাকে ৯ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়। কারাভোগ শেষে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে সে জামিনে মুক্তি পায়। মুক্তির দেড় বছরের মাথায় আবারও ঘটাল আরেকটি হত্যাকা-। এবার বড় ভাই দুলাল খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যাকে নির্মমভাবে হত্যা করল সে।

নিহত নাহিল আক্তারের বাবা দুলাল খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছে। তখন ওর বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে ৯ বছর সাজা ভোগ করে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জামিনে মুক্তি পায়। মুক্তি পাওয়ার দেড় বছরের মাথায় আমার শিশুকন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমার শিশুকন্যা কী অপরাধ করেছিল? আমি এর বিচার চাই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. টুকু শিকদার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে সে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে তারা এসে হাবিলকে আটক করে নিয়ে যায়।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, শিশুটির মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশালে পাঠানো হয়।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, নিহতের বাবা মো. দুলাল খান বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে মামলা করেছেন। ওই মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।