নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর প্রাইম হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেডে হাতের অস্ত্রোপচারের সময় ভুল চিকিৎসায় রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দুপুরে নিহতের মেঝো ছেলে মো. রাজন হোসেন এমন অভিযোগ করেন। এর আগে শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে রাবেয়া বেগম মারা যান। মৃত রাবেয়া বেগম লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের সর্দার বাড়ির শামছুল হুদার স্ত্রী।
নিহতের ছেলে রাজন হোসেন অভিযোগ করেন, দুই মাস আগে বাথরুমে পা পিছলে পড়ে তার মায়ের বাম হাতের কব্জির ওপরের অংশ ভেঙে যায়। স্থানীয় এক চিকিৎসক প্লাস্টার করে দেন। দুই মাস পর প্লাস্টার খুলে এক্স-রে করলে দেখা যায় ভাঙা হাড় জোড়া লাগেনি। পরে মাইজদীর প্রাইম হসপিটালের চিকিৎসক ডা. ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে ৭৫ হাজার টাকায় অস্ত্রোপচারের চুক্তি হয়। সেই অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যায় রাবেয়া বেগমকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
রাজনের অভিযোগ, রাত সাড়ে ১১টার দিকে অ্যানেসথেসিয়ান গোলাম হায়দার রোগীকে অজ্ঞান করেন। এরপর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। অজ্ঞান করার প্রায় এক ঘণ্টা পর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। দীর্ঘ তালবাহানার পর রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবারকে মৃত্যুর খবর জানায়। রাজনের দাবি, অজ্ঞান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মা মারা গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘রোববার সকালে হাসপাতাল জানায় অপারেশন, আইসিইউ বা অ্যাম্বুলেন্স কোনো খরচ লাগবে না, মরদেহ নিয়ে যেতে পারেন। প্রথমে বলে হাই প্রেসারের কারণে, পরে বলে লো প্রেসারের কারণে সমস্যা হয়েছে। দুপুরে আমার বড় ভাই ও জেঠা এসে হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা করে মরদেহ নিয়ে যান। কী সমঝোতা হয়েছে তা আমি জানি না।’
যোগাযোগ করা হলে প্রাইম হসপিটালের সিনিয়র এজিএম শিপন শাহ ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অপারেশনের পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। স্বজনদের আমরা বলেছি আপনারা চাইলে মামলা করতে পারেন।’
নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

