ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় নিখোঁজের তিন দিন পর এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে একটি ম্যানহোলের ভেতর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাত পৌনে ১২টায় নগরীর জেলাখানা রোড এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া ওই নারী (৩৮) নগরের গল্ডা এলাকার বাসিন্দা। তিনি গত বুধবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে যাননি। খোঁজ না পেয়ে তার বাবা ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। রোববার সারাদিন এই ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নেটিজেনদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের অব্যবস্থাপনার কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দিনব্যাপী খোঁজাখুঁজির পর রাত ৯টার দিকে পরিবার জানতে পারে তিনি জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন।
উদ্ধারকারী রিকশাচালক মো. রোমান মিয়া জানান, নারীর উদ্ধার হওয়া ম্যানহোলটির ঢাকনা লাগানো ছিল। তবে তার থেকে প্রায় ৫০ ফুট দূরে আরেকটি ম্যানহোলের ঢাকনা দীর্ঘদিন ধরে খোলা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তিন দিন আগে সে খোলা ম্যানহোলে পড়ে যান। এরপর ড্রেনের ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে ঢাকনা দেওয়া ম্যানহোলের নিচে চলে আসেন।
তিনি আরও বলেন, এলাকাটি ময়মনসিংহ-টঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে হওয়ায় দিনভর যানবাহনের শব্দ ও আশপাশের দোকান-ওয়ার্কশপের শব্দে নারীর বাঁচার আকুতি কেউ শুনতে পায়নি। রাত গভীর হলে শব্দ কমে এলে তাদের কানে সাহায্যের ডাক আসে। পরে স্থানীয়রা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফেসবুকে ঘটনাটি দেখে জেনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’ তিনি আরও বলেন, ‘ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে সিটি করপোরেশন আরও দায়িত্বশীল হলে এমন ঘটনা এড়ানো সম্ভব।’
সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের অনেক রাস্তায় ম্যানহোলের ঢাকনা নেই। এ বিষয়ে বহুবার বলেছি। কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব না দেওয়ার কারণেই আজ এ ঘটনা।’ তিনি আরও জানান, ‘ম্যানহোল খোলা থাকায় মানুষের চলাচল প্রতিনিয়ত অনিরাপদ হয়ে উঠছে। এর দায়ভার সিটি করপোরেশনকেই নিতে হবে।’

