চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া এনামুল হক এনামকে ঘিরে আবারও নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে। মনোনয়ন ঘোষণার পরই চার প্রভাবশালী নেতার পক্ষ থেকে উত্থাপিত হয়েছে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি। অন্যদিকে এই সৈয়দ সাদাত আহমেদ লাইভে এসে নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে আলোচনাকে আরও তীব্র করেছেন।
১৯ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত আবেদন পাঠান, সাবেক সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. ইদ্রিস মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম নেছার, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফউদ্দিন সালাম মিঠু।
চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, তাদের মধ্য থেকেই যাকে প্রার্থী করা হবে, তিনি এ আসনে জয়ের সম্ভাবনা বেশি রাখবেন। শাহজাহান জুয়েল দুইবারের নির্বাচিত এমপি এবং ইদ্রিস মিয়া জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন, এই অভিজ্ঞতার দিকটি তারা বিশেষভাবে তুলে ধরেন।
এদিকে, মনোনয়ন নিয়ে উত্তাপ বাড়ার মধ্যেই সম্প্রতি সৈয়দ সাদাত আহমেদ একটি লাইভ ভিডিওতে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি পটিয়া থেকে বিএনপির প্রার্থী হতে আগ্রহী এবং প্রস্তুত।
লাইভে তিনি বলেন, ‘পটিয়ার মানুষের দাবির জায়গা থেকে আমি প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি আরও দাবি করেন, তৃণমূলের একটি অংশ তাকে সমর্থন জানাচ্ছে। তার এই ঘোষণায় পটিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আরেকটি সমীকরণ তৈরি হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, এনামুল হক এনাম ২০১৮ সালে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। গত বছর একটি গাড়ি সরানো সংক্রান্ত ঘটনায় তাকে দল সাময়িক অব্যাহতি দিলেও পরে সতর্কবার্তার মাধ্যমে পুনর্বহাল করা হয়।
এই ঘটনা তার ভাবমূর্তিকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে প্রশ্ন তৈরি করেছে। চার নেতার চিঠিতেও অতীত বিতর্ক এবং গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পটিয়া আসনে বিএনপির জয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো অভ্যন্তরীণ ঐক্য। ঐক্য ধরে রাখতে না পারলে এই আসনটি হারাতে পারেন।
এদিকে চার নেতার চিঠি, সাদাতের লাইভ ঘোষণা ও এনামকে ঘিরে বিতর্ক, সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোন পথ বেছে নেবেন তা এখনো অনিশ্চিত। মনোনয়নের পর তৃণমূল নেতাকর্মীদের একত্রিত করে কোনো প্রোগ্রাম করতে পারায় এনামের জন্য বড় কাল হয়ে দাঁড়ালো।
অন্যদিকে গত ১৫ নভেম্বর গণসংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও শোভাযাত্রায় গাজী শাহজাহান জুয়েল প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য আভাস দিয়ে রেখেছিলেন। তিনি বলেন পটিয়ায় কোনো অশুভ শক্তির হাতে বিএনপিকে তুলে দেওয়া হবে না। তৃণমূল বিএনপিকে এক সঙ্গে নিয়ে পটিয়ার বিএনপিকে তারা ডেলে সাজাবেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন, জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় প্রার্থী ঠিক করা গেলে এ আসনে বিএনপি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন