সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বিভিন্ন হাওরে বোরো ফসল রক্ষায় প্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে গেছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত একটি পিআইসিও গঠন করা হয়নি। ফলে আসন্ন মৌসুমের ফসল ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় কৃষকদের।
কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী জরিপ, প্রকল্পের স্থান নির্ধারণ, প্রাক্কলন তৈরি, গণশুনানি এবং পিআইসি গঠন, সবকিছুই নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পাশাপাশি বাঁধের কাজ ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিপের কাজও পুরোপুরি শেষ হয়নি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, হাওরের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় দেরিতে নামায় সময়মতো জরিপ সম্পন্ন করা যায়নি। ১৪ নভেম্বর থেকে জরিপধর্মী দল মাঠে নেমেছে। এ বছর মধ্যনগর এলাকায় ৮৫ কিলোমিটার বাঁধে জরিপ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, আগামী পাঁচ দিনের মধ্যেই জরিপ শেষ হবে। এছাড়া ৪০টি পিআইসি গঠন করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে তারা।
মধ্যনগর এলাকার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কৃষক নজির হোসেন বলেন, বাঁধের কাজ সময়মতো শুরু না হলে সেটি টেকসই হয় না। তখন ফসল নিয়ে ভয় থাকে। আমরা ২০১৭ সালের মতো ক্ষতির মুখ দেখতে চাই না।
গোড়াডোবা হাওরের কৃষক আবদুল হামিদ বলেন, আমরা পুরোপুরি বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। তাই সময়মতো বাঁধের কাজ শুরু ও শেষ করা অত্যন্ত জরুরি; না হলে ফসল ঝুঁকিতে পড়বে।
এদিকে স্থানীয় কৃষকরা জানান, জরিপ ও পিআইসি গঠনের বিলম্বে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নই হুমকির মুখে। তারা আশঙ্কা করছেন নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু না হলে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ কার্যকর হবে না, যা বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যনগর উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী নূর আলম বলেন, হাওরের পানি দেরিতে নামায় সময়মতো জরিপ শেষ করা সম্ভব হয়নি। খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কাবিটা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল রায় বলেন, ১২ ডিসেম্বরের মধ্যেই পিআইসি গঠন সম্পন্ন হবে এবং ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধের কাজ শুরু হবে। পানি দেরিতে নামায় কাজ শুরুতে বিলম্ব হয়েছে। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব।

