ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

সারের দাবিতে কৃষকদের মহাসড়ক অবরোধ

হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:০৫ এএম

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দ্বিতীয় দিনের মতো সারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ক্ষুব্ধ কৃষকরা। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মেডিকেল মোড় গোলচত্বর এলাকায় সার বিক্রয়কেন্দ্র ‘মেসার্স ওয়াছেক খান’-এর সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে কৃষকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন।

কৃষকেরা জানান, লালমনিরহাট জেলার ব্র্যান্ড পণ্য ভুট্টা। বর্তমান মৌসুমে ভুট্টা চাষ শুরু হলেও সার সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। গত সপ্তাহে সিংগিমারী ইউনিয়নের কৃষকেরা একই দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে ডিলার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছিলেন। প্রতিশ্রুতি পেলেও কাক্সিক্ষত সার না পাওয়ায় আবারো তারা সড়ক অবরোধে নামেন।

হাতীবান্ধা উপজেলা সদরের সিন্দুর্না ইউনিয়নে বিসিআইসির পরিবেশক মেসার্স ওয়াছেক খানের সারঘর থেকে কয়েকদিন ধরে কৃষকেরা ঠিকমতো সার পাচ্ছিলেন না। বিক্রয়কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রোববার সকালে সিন্দুর্নার কৃষকদের সার দেওয়া হবে। এ ঘোষণায় ভোর থেকেই কৃষকেরা ভিড় জমান। মুহূর্তে দীর্ঘ লাইন পড়ে। কিন্তু কয়েকজনকে সামান্য সার দেওয়ার পর হঠাৎ বিক্রয়কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অভিযোগ উঠেছে, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, তানজিলা আক্তার ও গোবিন্দ কুমারের সহযোগিতায় পরিবেশক সারগুলো খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ কৃষকেরা পরিবেশক ও সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা এবং সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় প্রায় তিন ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পর্যাপ্ত সার সরবরাহের আশ^াস পেলে কৃষকেরা অবরোধ তুলে নেন।

চর গড্ডিমারী গ্রামের কৃষক আনারুল হক বলেন, ‘১১ দোন জমির জন্য ইউরিয়া সার প্রয়োজন। কয়েকদিন ধরে ঘুরছি তবুও সার পাচ্ছি না। আজও শূন্য হাতে ফিরতে হলো। কৃষি অফিসের লোকজনের সহযোগিতায় বাইরে বেশি দামে সার বিক্রি হচ্ছে।’

অরেক কৃষক ফিরোজ মিয়া বলেন, ডিলারের কাছে বারবার গেলেও সার পাওয়া যায় না। খুচরা বাজারে বেশি দামে দিচ্ছে। এই দুর্নীতি আর চলতে পারে না। ডিলার ও কৃষি কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই।

মেসার্স ওয়াছেক খানের স্বত্বাধিকারী মো. ওয়াছেক খান মুঠোফোনে বলেন, ‘কৃষি অফিসের লোকজন ছাড়া সার বিক্রি করা হয় না। আমার ছেলেরা ব্যবসা দেখাশোনা করে। আমি সবকিছু জানি না।’