টানা চার দিনের বৃষ্টির পর নোয়াখালী ও ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ধীরগতিতে পানি নামায় এখনো ব্যাপক জনদুর্ভোগ বিরাজ করছে। দুই জেলা মিলে এখনো প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
নোয়াখালী: নোয়াখালীতে এখনো জলাবদ্ধতায় ভুগছে ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ জন মানুষ। জেলায় বৃষ্টির পর এখন রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করছে। এতে কিছু এলাকার পানি নামতে শুরু করলেও এখনো অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলার ৪৫টি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ১ হাজার ৮৫০ জন মানুষ ও ১৭১টি গবাদিপশু। দুর্গত এলাকায় ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। বৃষ্টি না হলে জলাবদ্ধতা দ্রুত কেটে যাবে।’ আবহাওয়া অফিস জানায়, ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।
ফেনী: এদিকে ফেনীর পাঁচ উপজেলায় এখনো পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক থেকে পানি নামলেও ২৫টি গ্রামের নিচু এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা রয়ে গেছে। প্রাথমিক হিসেবে জানা গেছে, বন্যায় ২ হাজার ৩৫০টির বেশি মৎস্য ঘের ও পুকুর, ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর আমন বীজতলা ও ৬৫ লাখ টাকার প্রাণিসম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘরবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করলেও বহু মানুষ এখনো অন্যত্র অবস্থান করছেন। পরশুরামের ধনীকু-া গ্রামের বিমল দাস জানান, মুহুরী নদীর ভাঙনে তার দোচালা ঘর বসে গেছে। অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে।
ফুলগাজীর স্বপ্না আক্তার ও আনোয়ার হোসেন জানান, তাদের ঘর থেকে পানি নামতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে কিন্তু কোনো সরকারি সহায়তা এখনো পাননি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৬০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসমাইল হোসেন।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যা-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ চলছে। দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। বন্ধ থাকা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও পূর্বনির্ধারিত রুটিন অনুযায়ী শুরু হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :