কেন বর্তমান প্রজন্মের সেরা বলা হয় তাকে- সেটি আবারও প্রমাণ করলেন কার্লোস আলকারাজ। চলতি বছর চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামেরই ফাইনালে ওঠেন ইয়ানিক সিনার। এর মধ্যে দুটিতে চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন। ইউএস ওপেনের ফাইনালে এই নাম্বার ওয়ান সিনারকে হারিয়েই শিরোপা জিতলেন আলকারাজ। এ যেন স্প্যানিশ আর্মাডায় ধ্বংস হয়ে গেল ইতালির দুর্গ! চার সেটের লড়াইয়ে ৬-২, ৩-৬, ৬-১, ৬-৪ গেমে সিনারকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার ইউএস ওপেন জয়ের গৌরব অর্জন করলেন স্প্যানিশ তারকা আলকারাজ। এর আগে ২০২২ সালে প্রথম ইউএস ওপেন জিতেছিলেন তিনি। ট্রফি জয়ের আনন্দের পাশাপাশি সিনারকে টপকে আবার বিশে^র নাম্বার ওয়ান পুরুষ টেনিস খেলোয়াড়ও বনে গেলেন আলকারাজ।
এ নিয়ে চলতি বছর চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে দুটি জিতলেন ২২ বছর বয়সি এই তরুণ। এর আগে ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতেছিলেন এই স্প্যানিশ। অন্যদিকে, এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও উইম্বলডন জিতেছেন সিনার। গত ১১টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের পুরুষ এককের শিরোপার মধ্যে ১০টি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন আলকারাজ ও সিনার। আলকারাজের নামের পাশে ৬টি ও সিনারের নামের পাশে ৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা রয়েছে।
নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছিল ইউএস ওপেনের ফাইনাল। খেলা শুরুর আগে যখন আমেরিকার জাতীয় সংগীত গাওয়া হচ্ছে, তখন দেখা গেল, গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে স্যালুট করছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে অবশ্য আর তাকে দেখা যায়নি। খেলা শুরুর আগে দুই তারকার লকাররুমের ছবিটাও ছিল আলাদা। সিনার তার সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে ফুটসাল খেলছিলেন। মেজাজ ফুরফুরে দেখাচ্ছিল। সেখানে আলকারাজ কানে হেডফোন লাগিয়ে শরীরচর্চা করতে ব্যস্ত ছিলেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, এই ম্যাচ জিততে অনেক বেশি মরিয়া তিনি। কোর্টে নামার আগে আলকারাজ বলে গেলেন, তিনি একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নেমেছেন। তা হলো বিশে^র সেরা টেনিস তারকা হওয়া। আর তার জন্য ইউএস ওপেন জিততে হবে তাকে। পরের কয়েক ঘণ্টায় সেই লক্ষ্য বাস্তবে পরিণত করলেন তিনি।
ইউএস ওপেন জিতে সিনারের প্রশংসা শোনা গেল আলকারাজের মুখে। সিনারও সম্মান জানালেন প্রতিপক্ষকে। গত দুই বছর ধরে পুরুষদের টেনিস শাসন করায় বারবার একে অপরের বিপক্ষে খেলতে হয়েছে তাদের। এরই মধ্যে ১৫ বার মুখোমুখি হয়েছেন তারা। ফলে কোর্টের বাইরে কোথাও একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। সেটাই শোনা গেল দুজনের কথায়। ট্রফি নেওয়ার আগে আলকারাজ বললেন, ‘তুমি পরিবারের থেকেও বেশি কাছের। তোমার সঙ্গে কোর্ট ও লকাররুম ভাগ করতে ভালো লাগে। তোমাকে দেখে অনেক কিছু শিখেছি। আমাদের এই লড়াই আমাদের আরও ভালো টেনিস খেলোয়াড় হতে সাহায্য করেছে।’ সিনার স্বীকার করে নিলেন, যোগ্য হিসাবেই জিতেছেন আলকারাজ। তিনি বলেন, ‘তোমাকে অনেক শুভেচ্ছা। আজ তুমি আমার থেকে ভালো খেলেছ। যোগ্য হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছ। আমি নিজের সেরাটা দিয়েছি। এর থেকে ভালো খেলতে পারতাম না।’