দীর্ঘদিনের আন্দোলন, একাধিক কমিটি ও লিখিত আশ্বাসের পরও সমাধান না আসায় চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণছুটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তাদের দাবি, বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলা ও দমন-পীড়নের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। দাবি মানা না হলে চট্টগ্রামে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত এক জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান না এলে সারা দেশের ৮০টি সমিতির মতো চট্টগ্রামেও পূর্ণ গণছুটি শুরু হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানিয়েছেন, আগস্ট ২০২৪-এ বিদ্যুৎ বিভাগ প্রথম কমিটি গঠন করে, কোনো অগ্রগতি হয়নি। ২৩ অক্টোবর ২০২৪-এ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন; আট মাস পর প্রতিবেদন দাখিল হলেও প্রকাশিত হয়নি। ২১ মে-৫ জুন ২০২৫-এ টানা ১৬ দিন শহীদ মিনারে আন্দোলনের পর লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয়। ১৭ জুন ২০২৫-এ নতুন কমিটি গঠন হলেও তিন মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সমাধান আসেনি।
তাদের অভিযোগ, সমাধান না দিয়ে উল্টো দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। ৬ আগস্ট ২০২৫-এ এক কর্মকর্তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। মুক্তির পর পুনরায় জামিন বাতিল। ১৭ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত বা সংযুক্ত হয়। বৃহস্পতিবার ২ জন চাকরিচ্যুত ও ৪ জনকে বরখাস্ত। ৩৬ জনকে চাকরিচ্যুত, ২০ জনকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত করা, শতাধিক বরখাস্ত বা সংযুক্ত, ৬,৫০০ কর্মী গণবদলিতে নিজ জেলা থেকে গড়ে ৪-৫ শত কিমি দূরে পাঠানো।
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি, জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২৫-এ গৃহীত ‘আরইবি-পিবিএস একীভূতকরণ ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন’ দ্রুত কার্যকর করা।
তাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভাগ বিষয়টি বারবার পুনর্বিবেচনার নামে বিলম্ব করছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর জোনাল হেড অফিস, পটিয়ায় প্রতীকি লাশ নিয়ে আন্দোলন করেন কয়েক শত কর্মকর্তা-কর্মচারী।
তারা জানান, পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎ সেবা সচল রেখেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছেন। কিন্তু সমাধানের ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে অবশেষে গণছুটি কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন।