ঢাকা শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫

বদলগাছীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল বিতরণ নিয়ে সংশয়

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নওগাঁর বদলগাছীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি চাল নিয়ে চালবাজী চলছে। ডিলারেরা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা করে ব্যাংক চালান জমা করতে পারছে না উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে।

এ নিয়ে দির্ঘ্য প্রায় ৮ দিন অতিবাহিত হলেও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিদ্ধ্যান্তহীতায় ভুগছে। ফলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রায় ৭৭৫৫ জন উপকারভোগীর চাল পাওয়া নিয়ে অনিশ্চতার মধ্যে পরেছে। উপজেলা 

খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে দুটি করে মোট ১৬ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৬ জন ডিলার নিয়োগ রয়েছে। গত ৩১ আগষ্ট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত একটি পত্র যাহার স্মারক নম্বর-১৩.০১.৬৪০৬.০৩৬.৫৭.০০১.২৩.২৩.৩০৯ এর মাধ্যমে প্রতিটি ডিলারকে চিঠি ইসু করা হয়। চিটিতে বলা হয়েছে চলতি সেপ্টম্বর-২৪ মাসের চাল অত্র মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ব্যাংকে টাকা জমা করে চাল যথারিতি উত্তোলন করার জন্য বলা হলো। সেই মোতাবেক ডিলারেরা চলতি মাসের ৯ তারিখে ব্যাংকে টাকা জমা করবে মর্মে খাদ্য নিয়ন্ত্ররে কার্যালয়ে গোপন কোড নম্বর চাইতে গেলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারী মৌখিক ভাবে জানান, সকল ডিলারদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির মিটিং হবে তার পর মিটিং এর সিদ্ধ্যান্ত অনুয়ায়ী আপনারা ব্যাংকে টাকা জমা করবেন। 

এ বিষয়ে যথারিতে ৯ তারিখে বিকেল ৪ টার সময় উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি মাহবুব হাসানের নেতৃত্বে নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জরুরী মিটিং বসেন। ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত মিটিং শেষে সকল ডিলারদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হয়েছে তা তদন্ত করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পূর্ব পর্যন্ত যারা ডিলার রয়েছেন তাদেরকে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে চালান কপি খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা করতে বলা হয়। সেই মোতাবেক ডিলারেরা পরের দিন ১০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকে টাকা জমা করে চালান কপি খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা দিতে গেলে তারা চালান কপি জমা নিতে অস্বীকৃতি জানান। এর পর ৮ দিন অতিবাহিত হলেও বিষয়টি কোন সুরহা হয়নি। সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি ধরে চাল পাওয়া নিয়ে উপজেলার ৭৭৫৫ জন উপকার ভোগীর মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। 

উপজেলা তেজাপাড়া গ্রামের উপকারভোগী নন্দলাল জানন, প্রতিমাসের ১০/১২ তারিখের মধ্যে আমরা ১৫ টাকা কেজির চাল পেয়ে যেতাম। এখন মাসের ১৭ দিন চলে গেলে ও চাল পাচ্ছিনা। যা আমার পরিবারের জন্য কষ্টকর হয়ে পরেছে।

ডাঙ্গিসাড়া গ্রামের রশিদা, গাজীমদ্দীন,বয়তুল সহ অনেক উপকারভোগী তারা ও একই কষ্টের কথা জানিয়েছে। তাদের দাবী আমরা গরিব মানুষ রাজনীতি বুঝিনা। চাল পেলেই পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বাঁচতে পারি এতেই আমরা সুখী।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার এরশাদ, রানা, মেহেদি, জামিল সহ সকলেই জানায়, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক উপজেলার কিছু রাজনৈতিক ব্যাক্তির কথা শুনে আমাদের ব্যাংক চালান জমা নিচ্ছেনা এবং চাল উত্তোলন করতে না দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এর সুষ্ট বিচার চাই।

এ বিষয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারীর কাছে জানতে চাইলে সে বলে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কি ধরনের প্রক্রিয়া চলছে জানতে চাইলে সে বলে, খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি ইউএনও স্যার বলতে পারবেন। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।

উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসানের কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, বিষয়টি নিয়ে বিবৃতকর অবস্থায় আছি। কি ধরণের বিবৃত বোধ করছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে সে বলে স্থানীয় লিডারদের চাপের মুখে রয়েছি। তবে আগামী দুই এক দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উত্তোলন সময় আগামী ২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ৩০ সেপ্টম্বরের মধ্যে উপকারভোগীদের নিকট চাল বিতরণ করার সুযোগ রয়েছে। ডিলারেরা এই সময়ের মধ্যে চাল উত্তোলন ও বিতরণ করতে পারবে। বদলগাছী খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলারেরা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে ব্যাংক চালান জমা করতে ও চাল উত্তোলন করতে পারছেনা কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওইটা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিষয়।