বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৫, ০৮:৪০ এএম

জ্বালানি সংকটে সিলেট

সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৫, ০৮:৪০ এএম

জ্বালানি সংকটে সিলেট

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সিলেটে রয়েছে তেলের খনি। সেই তেলে মিটছে দেশের জ্বালানি চাহিদা। কিন্তু তেলের জন্মভূমি সিলেটেই চলছে জ্বালানি সংকট। এ যেন বাতির নিচে অন্ধকার। সিলেটের পেট্রোলপাম্পগুলোতে চলছে হাহাকার। চট্টগ্রাম থেকে পরিশোধিত হয়ে সময়মতো তেল সিলেটে এসে পৌঁছাতে না পারাই মূলত সংকটের মূল কারণ।

সূত্র জানায়, একসময় সিলেট থেকে উৎপাদিত তেল দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব হতো। কিন্তু এখন এই তেল চট্টগ্রাম ঘুরে আসে সিলেটে। এতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে সিলেট। এবার গত এক সপ্তাহ ধরে সিলেটে জ্বালানি তেলের সংকট চলছে। 

জ্বালানিবাহী ট্রেন সিলেটে না আসায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার তেলবাহী একটি ট্রেন সিলেটের পথে রওনা দিয়েছে। এটি এসে পৌঁছালে প্রাথমিকভাবে সংকট কেটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, রাতে (বৃহস্পতিবার) জ্বালানিবাহী একটি ট্রেন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে এসে ঢোকার কথা রয়েছে। আগামীতে যাতে যথাসময়ে জ্বালানিবাহী ট্রেন সিলেটে আসতে পারে, সে জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। 

সিলেটে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ১০ লাখ লিটার। এই চাহিদা পূরণে প্রতি সপ্তাহে জ্বালানি তেলের ওয়াগনবাহী দুটি ট্রেন সিলেটে আসে। পরে বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা, যমুনার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছে তেল পৌঁছানো হয়। কিন্তু গত ২৪ জানুয়ারি সর্বশেষ ৪ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে সিলেটে এসেছিল ট্রেন। এরপর আর আসেনি। এ কারণে গত তিন দিন ধরে সিলেটে জ্বালানি তেলে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। 

সিলেটে জ্বালানি তেলের বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১১৪টি পেট্রোল পাম্প। এসব পাম্পে তেল বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে যানবাহন চলাচলে এসব তেল ব্যবহার করা হয়। পাম্প মালিকরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে সিলেটে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন আসেনি। 

এ কারণে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এ কারণে পাম্প মালিকরা বাধ্য হয়ে নিজেদের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জ ডিপো থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে এনে চাহিদা পূরণের চেষ্টা করেন। 

এতে অবশ্য ট্যাংক লরির সাপোর্ট দিয়েছে বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান। তবে বিকল্প পথে জ্বালানি তেল নিয়ে আসার কারণে পাম্প মালিকদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালিকরা। তারা জানান, বিকল্প পথে জ্বালানি সংগ্রহ করতে হলে খরচ বেশি পড়ে। শ্রমিকও বেশি লাগে। 

বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, জ্বালানি তেল সংকটের কারণে সিলেটের মানুষ বারবারই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আমরা শত চেষ্টা করেও চাহিদা পূরণ করতে পারি না। 

এ জন্য শুধু রেলপথের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। রেলপথনির্ভরতা কমিয়ে নৌপথ ব্যবহার করলে খরচ কম পড়ত। একই সঙ্গে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকত। তিনি বলেন, এখন আমরা সড়কপথে তেল এনে সিলেটের মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারছি। সেটি শুধু পেট্রোলপাম্প মালিকরা সংকট কিছুটা দূর করতে পারছেন। 

কিন্তু বোরো মৌসুমে সেচের জন্য জ্বালানি তেল প্রয়োজন। সেই তেল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রায় সময় ট্রেনের ইঞ্জিন সংকট থাকে। এ কারণে সময়মতো ট্রেন আসতে পারেন না। এ জন্য অবশ্য তাদের আন্তরিকতার কমতি নেই বলে জানান তিনি। 

এদিকে সিলেটের জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ সিলেট থেকে উৎপাদিত তেল দিয়ে করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, অতীতে চট্টগ্রাম থেকে তেল আসার অপেক্ষা করতে হতো না। সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাস ও তেলক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত তেল দিয়ে অনেকাংশে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হতো। কিন্তু গত ৪ বছর আগে সিলেট থেকে উৎপাদিত তেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। 

সিলেটের তেলই চট্টগ্রাম থেকে ঘুরে সিলেটে আসে। এটা দুঃখজনক বলে জানান তারা। পাম্প মালিক অ্যাসোসিয়েশের মহাসচিব জানান, সিলেটে উৎপাদিত তেল সিলেটে রাখতে পারলে আমাদের সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে। অন্যথায় রেলপথে ভোগান্তি বাড়বে। নৌপথ ব্যবহার করলে দুর্ভোগ কম হতে পারে বলে অভিমত দেন তিনি।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!