ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

আবারও প্রাথমিকে চালু হচ্ছে বৃত্তি

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ১০:৪৪ এএম
ছবি: সংগৃহীত

শিশুদের শিক্ষার মানের কথা চিন্তা করে আবারও প্রাথমিকে চালু করতে যাচ্ছে বৃত্তি এমনটাই জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেন, প্রাথমিকে যে কারিকুলাম চালু হয়েছে, সেটা অভিভাবকরা গ্রহণ করেননি। সামগ্রিক অবস্থা মিলে প্রাথমিক শিক্ষার মানের অবনতি ঘটেছে। আমরা চেষ্টা করছি, সে মানের উন্নয়ন করতে।

শনিবার (৩ মে) লক্ষ্মীপুর জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের লক্ষ্য হলো ন্যূনতম সাক্ষরতা, শিশুরা মাতৃভাষায় সাবলীলভাবে বলতে পারবে, পড়তে পারবে, লিখতে পারবে। গাণিতিক বিষয়ে সাক্ষরতা অর্জন করবে। যদি শিশুরা সেগুলো পারে তাহলে বলবেন তারা লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রাথমিকে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে, বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি। মৌলিক শিক্ষার পাশাপাশি কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস যেমন- বিতর্ক প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা উৎসব, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, তারা যৌক্তিক দাবিকে স্বীকৃতি দেন, মন্ত্রণালয় কার্যকর করার চেষ্টা করে। শূন্যপদ পূরণে চেষ্টা করছেন। অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিকল্পনায় কিছু সমস্যা রয়েছে, তবে অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। চোখে পড়ার মতো।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকারের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ প্রমুখ।

‘একসময় বিদ্যালয়ের বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে হতো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। সেটি বাদ দিয়ে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা। তাতে সব শিক্ষার্থীই বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারত। যদিও পিইসি পরীক্ষা নিয়ে ছিল সমালোচনা। কারণ এর ফলে কোচিং-প্রাইভেটের প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। এই পরীক্ষার নামে এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং এরপর শিক্ষাক্রমের রূপরেখা বিবেচনায় পিইসি পরীক্ষা আর হয়নি। তখন বৃত্তিও বন্ধ হয়।’

‘২০২২ সালে একেবারে শেষ বেলায় এসে আকস্মিকভাবে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও বিশেষজ্ঞরা সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। বৃত্তি পরীক্ষাও ওই বছর। কিন্তু এরপর ওই বৃত্তি পরীক্ষার ফল নিয়েও ব্যাপক ভুলভ্রান্তির ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলন করে বৃত্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণ দেখিয়ে ফল স্থগিত করতে হয়েছিল। পরে অবশ্য সংশোধন করে ফল প্রকাশ করা হয়। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ২০২৩ সালেও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও শেষমেশ বৃত্তি পরীক্ষা থেকে সরে আসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন আবার বৃত্তি চালু পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা।’