লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে অনেক গরু মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন নতুন করে আক্রান্তের হার বাড়ছে। ফলে হতাশায় ভুগছেন গবাদিপশুর মালিকরা।
উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না অল্প বয়সের বাছুর এমনকি স্বাস্থ্যবান গরুও। চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে শত শত গরু।
কৃষকদের অভিযোগ, মাঠ পর্যায়ে দেখা মিলছে না উপজেলা প্রাপিসম্পদ অফিসের লোকজনদের। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, উপজেলার জামালপুর গ্রামে ১ সপ্তাহের মধ্যে ১৬-১৭টি করে গরু মারা গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, গ্রামের পশু চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসার কারণে অনেক গরু মারা যাচ্ছে।
স্থানীয়রা কয়েকজন বলেন, ‘গত বছর এই রোগের আক্রমণে শত শত গরু মারা গেছে, সেই ব্যথাই শেষ হয়নি। আবারও ঘুরে এলো সেই ভাইরাস। বাংলাদেশ সরকার এই রোগের জন্য গুরুত্ব না দিলে গরু মালিকদের হতাশায় দিন কাটবে।’
তারা বলেন, ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ এতটাই ভয়াবহ যে, কোনো ওষুধের তোয়াক্কা করে না। ভালো গরু সন্ধ্যায় গোয়াল ঘরে উঠানো হয়। সকালে গিয়ে দেখা যায় সমস্ত শরীরে ফুলা এবং খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটে। ফুলে যাওয়া স্থান কয়েকদিন পর চামড়া উঠে যায় এবং ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ-রক্ত বের হয়।’
গরু ব্যবসায়ী মমিন ও শামিম মিয়া বলেন, ‘আমরা গ্রাম থেকে গরু কিনে হাটে বিক্রি করি। এতে উভয়ের লাভ হতো। এখন গ্রামে গরু কেনা অনেকটাই কমে গেছে। কারণ ভাইরাসে আক্রান্ত গরু বোঝা যায় না। সেই কারণে গরুর বাজার অনেকটাই কম।’
‘গরু গ্রাম থেকে কিনে হাটে নিয়ে যাই। হঠাৎ করে বাছুর মারা যায়। এতে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লোকসান হয় আমাদের। যে কারণে অনেক গরু ব্যবসায়ী ব্যাবসা বাদ দিয়ে বসে আছেন।’
ভুক্তভোগী কৃষকরা বলেন, ‘লাম্পি স্কিনের হাতুড়ি মার্কা কিছু চিকিৎসক রয়েছে, তারা সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে গরুর দুই পাশে ইনজেকশন পুশ করে টাকা হাতিয়ে নেয়। লাম্পি নিয়ে মহাবিপদে রয়েছে গরুর মালিকরা।’
তারা আরও বলেন, ‘উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কোনো চিকিৎসক গ্রামে দেখা যায় না। সরকারের বেতন ভাতা খায় আর অফিসে বসে দিন পার করে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস পল্লী অঞ্চলের কৃষকের কোনো কাজে আসছে না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিস্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলুল কবির বলেন, ‘লাম্পি স্কিন রোগের চিকিৎসার জন্য সরকার কাজ করছে। এ রোগের ভ্যাকসিন হাতে পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ নিয়ে আমরা সাধারণত খামারিদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছি।’