টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার গারোবাজার এলাকায় বিএনপির একটি ওয়ার্ড অফিসে আওয়ামী লীগ কর্মী হারুন অর রশিদের নিয়মিত যাতায়াত ও আড্ডার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যায়, তিনি অফিসের একটি টেবিলে পা তুলে সিগারেট হাতে বসে আছেন।
রোববার (২৫ মে) রাতে ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ছবিটি ‘জিয়ার সৈনিক’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। এতে লেখা ছিল, ‘বাহ্! আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কুখ্যাত ভূমিদস্যু একাব্বর চেয়ারম্যানের ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হারুন বলে কথা। বিএনপির অফিসে হাতে সিগারেট আর টেবিলে পা তুলে বসে থাকা সাধারণ জনগণকে মোটেও অবাক করেনি। কারণ এই এলাকায় স্বজনপ্রীতির রাজনীতি পুরোনো বাস্তবতা।’
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, জুলাই মাসে আন্দোলনের সময় হারুন ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। পরে বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় তিনি এলাকায় ফেরেন এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সেই থেকেই বিএনপির অফিসে নিয়মিত আড্ডা দিতে দেখা যায় তাকে। তিন মাস আগে এই অফিসটি উদ্বোধন হওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যেই হারুন সেখানে যাতায়াত শুরু করেন এবং আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন কর্মীকেও নিয়ে আসেন বলে জানান এলাকাবাসী।
হারুন অর রশিদ এ বিষয়ে বলেন, এটা আসলে বিএনপির অফিস নয়, একটা খোলা ঘর। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সেখানে যাওয়া হয়। ঘরটি আমার আত্মীয় খোরশেদ তালুকদারের, যিনি উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইকবাল তালুকদারের ভাই। ছবিটি যেদিন তোলা হয়, সেদিন আমার সঙ্গে সেখানে ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এবং শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম।
ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ নেতারাও এ ঘটনায় বিভক্ত মত দিয়েছেন। লক্ষ্মীন্দর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাস আলী আকন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার দোষ যতটা না, তার চেয়ে বেশি দায় আমাদের সিনিয়র নেতাদের। তারা নিজেরা আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বসেন, তাদের ছাড়া চলতে পারেন না।
লক্ষ্মীন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। গারোবাজারের ওই অফিসটি ২নং ওয়ার্ড বিএনপির। সেখানেই সাধারণত উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইকবাল তালুকদার বসেন।
তবে ইকবাল তালুকদার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, আমার আত্মীয় হারুন কখন অফিসে গিয়ে এ ধরনের আচরণ করেছে, তা আমার জানা ছিল না।
উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, যদি কেউ আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন এবং দলীয় অফিস ব্যবহার করতে দেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :