ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
ভোলার চরফ্যাশনে বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় জাহিদুল (২৫) নামের এক যুবককে ডেকে নিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ভোলার চরফ্যাশনে বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় জাহিদুল (২৫) নামের এক যুবককে ডেকে নিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে চরফ্যাশনের চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের মেয়াজানপুর গ্রামের তালুকদার চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

চার দিন পর সোমবার (৭ জুলাই) নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি ভাইরাল হয়। স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

নির্যাতনের শিকার জাহিদুল শশীভূষণ থানার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি পেশায় মোটরসাইকেলচালক। বর্তমানে তিনি চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

জাহিদুলের মায়ের ভাষ্য, অভিযুক্ত যুবক তুহিন দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারের সঙ্গে পরিচিত। সুযোগ নিয়ে সে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত এবং পরবর্তীতে বিয়ের প্রস্তাবও দেয়। পরিবার থেকে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে জাহিদুলকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁদে ফেলে ডেকে নেয় এবং নির্যাতন করে।

ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত তুহিন, যুবদল নেতা ইমন তালুকদার, আমিনুল ইসলাম ও মো. সিদ্দিক মিলে জাহিদুলকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে ফ্লাস দিয়ে হাত-পায়ের নখ তুলে, পানিতে চুবিয়ে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে এবং মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টাও করা হয়।

জাহিদুলের বাবা মাজেদ মাঝি জানান, স্থানীয় এক রিকশাচালকের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি গ্রাম পুলিশ বজলু রহমানের সহায়তায় ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগীর পরিবার দাবি করেছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের মেয়েকে এসিড নিক্ষেপ ও জাহিদুলকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার বিষয়টি আমরা জেনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং হাসপাতালে গিয়ে তথ্য নিয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অন্যদিকে, অভিযুক্ত তুহিন ও যুবদল নেতা ইমন তালুকদার গা-ঢাকা দেওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তুহিনের বাবা মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, ছেলে এখন বাড়িতেও নেই।’