শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৬:১১ পিএম

বেনাপোলে টানা বৃষ্টিতে ব্যবসায়ীদের লোকসান, কর্তৃপক্ষ নীরব

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৬:১১ পিএম

বেনাপোল বন্দরে টানা বৃষ্টিতে মালামাল ভিজে গেছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বেনাপোল বন্দরে টানা বৃষ্টিতে মালামাল ভিজে গেছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

টানা তিন দিনের বর্ষণে বেনাপোল স্থলবন্দরে কোটি কোটি টাকার পণ্য পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাপক এ ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের মধ্যে রয়েছে- আমদানিকৃত বিভিন্ন ধরনের কাগজ, টেক্সটাইল ডাইস, কেমিক্যাল, বন্ডের আওতাভুক্ত গার্মেন্টসের কাপড়, সুতা এবং বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত কাঁচামাল।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগে যেখানে পানি নিষ্কাশিত হতো, সেই কালভার্টগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি আটকে গেছে। বেনাপোল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বন্দরসংলগ্ন ছোট আঁচড়ার নিচে মাটি রেখে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়ায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

পরে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান ও বন্দর উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার কালভার্টের নিচে থেকে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেন।

জলাবদ্ধতার কারণে বুধবার সকালে কাজ বন্ধ করে দেন বেনাপোল বন্দর শ্রমিকরা। এ সময় বন্দর কর্মকর্তারা পরিস্থিতি শান্ত করে দ্রুত পানি সরানোর উদ্যোগ নেন।

জানা গেছে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বেনাপোল বন্দরে প্রায়ই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ব্যাহত হয় পণ্য খালাস কার্যক্রম। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই বন্দরের বহু অংশে হাঁটু পানি জমে যায়। এতে শুধু পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, শ্রমিকরাও পড়েন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

বেনাপোল বন্দরে পানিতে ভিজে গেছে মামামাল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২২ থেকে ২৪ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। এসব পণ্য সংরক্ষণের জন্য বন্দরে রয়েছে ৩৩টি শেড, ৩টি ওপেন ইয়ার্ড এবং একটি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড। কিন্তু অধিকাংশ অবকাঠামো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াই নির্মিত হওয়ায় জলাবদ্ধতার সমস্যায় ভোগে।

বুধবার সকালে ৯, ১২, ১৩, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর শেডে দেখা যায়, প্রতিটি শেডেই বৃষ্টির পানি থৈ থৈ করছে। শ্রমিকরা জগ, মগ ও বালতি দিয়ে পানি সেচে বের করছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯ নম্বর শেড, যেখানে এক ফুট পর্যন্ত পানি ঢুকে নিচের সমস্ত মালামাল নষ্ট করে ফেলেছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদ আলী বলেন, ‘বর্ষণে বন্দরে পানি জমে থাকায় শ্রমিকরা কাজ করতে পারছে না। অনেকে চুলকানি ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।’

ব্যবসায়ী বকুল মাহবুব বলেন, ‘প্রতিবছর বন্দরের ভাড়া বাড়লেও উন্নয়নে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় আমদানিকারকদের পণ্য ভিজে নষ্ট হচ্ছে।’

স্থায়ী নালা তৈরি না করে অস্থায়ী নালা করে পানি ‍নিষ্কাশন করা হচ্ছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ 

আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক আনু বলেন, ‘সরকার প্রতি বছর বেনাপোল বন্দর থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে, অথচ বছরজুড়ে বন্দর এলাকা থাকে পানিতে ডুবে। ব্যবসায়ীদের বারবার অভিযোগের পরও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

সাবেক সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী নেতা মফিজুর রহমান সজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনগুলো বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কথা বলে এলেও কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বীমা না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারকরা কোনো ক্ষতিপূরণ পান না।

বন্দর উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, ‘রেলওয়ের বন্ধ করে রাখা কালভার্ট থেকে মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে ভবিষ্যতে আর এমন ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে না।’

Shera Lather
Link copied!