ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৬০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৭:১৯ এএম
জব্দকৃত চাল । ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় ভিজিডি ও ভিজিএফ (খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি) এর জন্য বরাদ্দ করা ১৬০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেছে প্রশাসন।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার গৌড় মন্দির এর পাশে একটি দোকানে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

জানা গেছে, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত এ চাল গোপনে মজুত করে রাখা হয়েছিল অবৈধ বিক্রির উদ্দেশ্যে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাসরিন এবং উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় সরকারি চাউল ও চাউলের সরকারি খালি বস্তাসহ একটি ওজন মাপার মিটার, বস্তা সেলাইয়ের মেশিন উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একটি কক্ষে সংরক্ষণ করা হয়।

অভিযান শেষে ইউএনও শাহীনা নাসরিন সাংবাদিকদের বলেন, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে সরকারি চাল আত্মসাৎ করা এক ধরনের অপরাধ। সরকারি চাল আত্মসাতের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা ১৬০ বস্তা চাউল এবং অনেকগুলো খালি বস্তা উদ্ধার করেছি। এই ঘটনায় জড়িত আশুরাইল গ্রামের মো. মোনায়েম মিয়া (৪৫), পিতা-মৃত নূর ইসলাম দোকানের কার্নিস ভেঙ্গে পালিয়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা ২ জন শ্রমিককে আটক করেছি।

সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই চাউল অনেক পুষ্টি মানসম্পন্ন, যা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার জন্য তৈরি করা কিন্তু তারা কিভাবে এত চাউল সংগ্রহ করেছে, আমরা তা খতিয়ে দেখছি। 

অন্যদিকে উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, নাসিরনগর উপজেলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু আছে। এই কর্মসূচির আওতায় গরীব ও দুস্তদের মাঝে চাউল বিতরণ করার জন্য ২৬ জন ডিলার আছেন। তারা তাদের বরাদ্দকৃত চাউল খাদ্য গুদাম থেকে বুঝে নিয়ে যায় এবং এই চাউল প্রকৃত উপকারভোগী কার্ডধারীদের যথাযত নিয়মে বিতরণ করা হয়। আমরা এই অভিযানে চাউলের মালিককে পাইনি।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পারভেজ মিয়া জানান, অসাধু একটি মহল নিয়মিতভাবে সরকারি চাল ও ত্রাণ আত্মসাৎ করে। এর ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা প্রশাসনের কাছে অনিয়মকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

প্রশাসনের এ অভিযানে এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে। সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করে আশা করছেন, নিয়মিত এ ধরনের অভিযান চালানো হলে ভবিষ্যতে কেউ আর সরকারি ত্রাণসামগ্রী আত্মসাতের সাহস দেখাবে না।