গাজীপুরের কাশিমপুর থেকে কোনাবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হলেও ধীরগতির কারণে জনজীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজের তেমন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশন ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কোনাবাড়ী-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়কে ড্রেন নির্মাণ ও আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ শুরু করে। তবে শুরুতেই বিভিন্ন স্থানে গর্ত খুঁড়ে কাজ বন্ধ রাখায় সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী, স্থানীয় বাসিন্দা, পোশাকশ্রমিক, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা।
স্থানীয়রা জানান, গেল একযুগেও এই সড়কটির উন্নয়ন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমে যায়। প্রতিদিন পোশাকশ্রমিক, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ লাখো মানুষের দুর্ভোগ নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
অটোচালক রবিন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ এই রাস্তায় গাড়ি চালাই, রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ থাকায় গাড়ি ঠিকমতো চালাতে পারি না। যার কারণে আমরা সংসার চালাতে এখন হিমশিম খাচ্ছি।
এক রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তাটা বন্ধ থাকায় সড়কে সাধারণ মানুষের চলাচলও কম। এতে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় পথে। আমরা দ্রুত এই সড়কের সংস্কার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবেদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কাশিমপুর থেকে কোনাবাড়ী সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতায় ডুবে যেত সড়ক, প্রতিনিয়ত ঘটত ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এখন কাজ শুরু হলেও কাজের তেমন অগ্রগতি না থাকায় চলাচলের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৭ এর উপসহকারী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, ২৪ ফুট প্রশস্ত এই সড়কের ৭ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেনসহ আরসিসি ঢালাই কাজ শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সড়কটির প্রস্থ ৬০ ফুট পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
তবে বাস্তব অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তারা জানান, কোনাবাড়ী থানার সামনে থেকে হক মেডিকেল পর্যন্ত কেবল ড্রেন খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এরপর থেকে কাজের আর কোনো গতি নেই। এতে সড়কটি যেন উন্নয়নের বদলে ভোগান্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এলাকাবাসী এই ভোগান্তি থেকে অচিরেই মুক্তি চান।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, কোনাবাড়ী থেকে কাশিমপুর হয়ে বাগবাড়ী ঈদগাহ পর্যন্ত সড়কটি ৩টি প্যাকেজে বিভক্ত করে কাজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনাবাড়ী থেকে জরুন লক্কু মার্কেট পর্যন্ত প্রথম প্যাকেজের ৩১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এই অংশ শেষ করার কথা রয়েছে। বাকি দুটি প্যাকেজও নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে বলে আশা করছি। কাজের ধীরগতি প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারকে ডেকে সতর্ক করা দেওয়া হয়েছে। কোনো গাফলতি লক্ষ করলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।