শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৪, ০২:১২ পিএম

বেড়েই চলেছে চুইঝালের চাষ, লাভবান কৃষক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৪, ০২:১২ পিএম

বেড়েই চলেছে চুইঝালের চাষ, লাভবান কৃষক

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে বেড়েই চলেছে লতা জাতীয় ঔষধীগুন সম্পন্ন উদ্ভিদ চুইঝালের চাষ। জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে চার উপজেলাতেই চুঁইঝাল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। তরকারীতে মসলা হিসেবে ব্যবহার করায় প্রতিনিয়ত চাহিদাও বেড়েছে এই উদ্ভিদটির। তবে এ অঞ্চলের কিছু অংশে চুইঝালের চাষ হলেও এখানকার চেয়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জেলাগুলোতে।

চুইয়ের বিশেষত্ব হলো, এটি স্বাদে ঝাল। খুব তীব্র নয়, ঝাল ঝাল ভাব। এই ভাবটাই চুই খাওয়ার পর স্বাদটাকে আরও বেশি রসময় করে তোলে। চুই গাছ দেখতে অনেকটা পানের লতার মতো। এর পাতায় ঝাল নেই। এর শিকড়, কাণ্ড বা লতা কেটে টুকরো টুকরো করে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। দেড় থেকে ২ ইঞ্চি টুকরা করে কেটে সেটা মাঝখান দিয়ে ফালি করে খাবার রান্নার একটি নির্দিষ্ট সময়ে এটা ব্যবহার করতে হয়।

কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে রাজারহাট, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় চুইঝাল চাষ হচ্ছে। লতা জাতীয় এই উদ্ভিদটির চাহিদা দিনে দিনে বেড়ে যাওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার অধিকাংশ বাড়ির বিভিন্ন ফলজ বনজ ও সুপারী গাছে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে। 

চুইঝালের ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, এটি পরগাছা জাতীয় উদ্ভিদ হওয়ায় এর চাষে বাড়তি কোন ব্যবস্থা নিতে হয় না। যে কোন গোছের গোড়ায় সামান্য সার দিয়ে চুইঝাল এর একটি লতা রোপণ করলেই স্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে। গাছের বয়স যত বাড়তে থাকে এর শিকড় ও লতা এবং কান্ডও ততো মোটা হতে থাকে। একটি চুইগাছ তিন বছর বয়স হলেই পরিপক্ব হয় এবং বিক্রি উপযোগী হয়। এছাড়া আরও বেশী বয়সী গাছ বিক্রি করলে তার কান্ড ও লতা বেশী মোটা হয় এবং দামও বেশী পাওয়া যায়। পাঁচ বছর বয়সী একটি চুঁই দুই থেকে তিন মন ওজন পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতিমন চুই গাছ ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। 

চাষীরা জানান, মাটি ভেদে কোন কোন গাছে ছত্রাকের আক্রমন হয়। সেক্ষেত্রে প্রতিরোধী কীটনাশক স্প্রে করলে সহজেই নিরাময় করা যায়। চুইঝাল মুলত মাংস জাতীয় তরকারীতে ব্যবহার করলে এর স্বাদ ও গন্ধ বৃদ্ধি পায়। 

জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের চাকেরকুটি এলাকার হোসেন আলী বলেন, আমি ২৫-৩০ বছর যাবত বাড়ির বিভিন্ন গাছে চুইঝাল চাষ করছি। প্রতিবছর ৪০-৫০ হাজার টাকার চুইঝাল বিক্রি করি। চুইঝাল চাষে তেমন খরচ নেই। আমাদের প্রায় ২০০-২৫০টির মতো গাছে চুইঝাল রয়েছে। এছাড়াও আমার গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কম বেশি চুঁইঝালের গাছ রয়েছে। 

একই এলাকার সাঈদুর রহমান বলেন, গ্রামের অনেক মানুষের চুইঝাল চাষ করা দেখে আমি গত চার বছর আগে কিছু গাছে লাগিয়েছি। একবার বিক্রি করেছি। কোন প্রকার ব্যয় ছাড়াই লাভ হয়েছে। আরও বড় পরিসরে করার চিন্তা ভাবনা করছি। 

শহিদুল ইসলাম বাচ্চু নামের একজন বলেন, চুইঝাল চাষে আলাদা কোন জমির প্রয়োজন হয় না। বাড়ির যেকোনো গাছে চাষ করা যায়। এ গাছটি চাষে তেমন খরচও নেই। পরিচর্চাও করতে হয় না তেমন। আমরা চুইঝাল চাষে ভালোই আয় করছি।

নাগেশ্বরী কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, চুইঝাল মসলা ও ঔষধীগুন সম্পন্ন গাছ। উপজেলার চাকেরকুটি গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই প্রায় এ গাছটি আছে। এ গাছে তেমন কোন পরিচর্চা করতে হয় না। বিশেষ করে বাগান বাড়িতে যে গাছগুলো আছে তার গোরায় লাগালে  হয়ে যায়। কৃষকরা ভালো দাম পাওয়ার কারণে দিন দিন চুইঝাল চাষ বাড়ছে। দুর দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে এখান থেকে কিনে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে বিক্রি করছে। ওইসব এলাকায় গাছটির অনেক কদর রয়েছে। 

কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যার শিক্ষক ও অধ্যক্ষ মির্জা নাসির উদ্দিন বলেন, চুইঝাল মুলত লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এটি তরকারিতে স্বাদ বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়া ব্যাথা, সর্দ্বি-কাশি ও জ্বর নিরাময়েও এর ভূমিকা অপরিসীম। আর চুঁইঝাল নিয়ে গবেষনা করে এর চাষ বৃদ্ধি করতে পারলে জেলা তথা দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চুইঝাল চাষ বানিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে দিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কুড়িগ্রামে তরকারিতে এটির কদর কম থাকলেও, খুলনা বিভাগে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 

আরবি/জেডআর

Link copied!