শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৫, ০৬:২৯ এএম

সাড়ে ১০ হাজার বছর আগের নারীর মুখাবয়ব পুনর্গঠন করলেন বিজ্ঞানীরা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৫, ০৬:২৯ এএম

পূর্ববর্তী গবেষণার তুলনায় মহিলাটির ত্বক ফর্সা হতো। ছবি- সংগৃহীত

পূর্ববর্তী গবেষণার তুলনায় মহিলাটির ত্বক ফর্সা হতো। ছবি- সংগৃহীত

প্রায় ১০ হাজার ৫০০ বছর আগে বর্তমান বেলজিয়ামে বসবাসকারী এক প্রাগৈতিহাসিক নারীর কঙ্কালের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা তার মুখাবয়বের একটি রূপ তৈরি করেছেন।

ঘেন্ট ইউনিভার্সিটির নেতৃত্বাধীন একদল গবেষক জানান, প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই নারীর চোখ ছিল নীল এবং তার ত্বক পশ্চিম ইউরোপের মেসোলিথিক যুগের অন্যান্য মানুষের তুলনায় কিছুটা হালকা ছিল। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এই তথ্য জানায়।

মেসোলিথিক বেলজিয়াম নিয়ে গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া ঘেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ববিদ ইসাবেল ডে গ্রুট সিএনএন-কে বলেন, এই নারী যুক্তরাজ্যের চেডার ম্যান নামের একই সময়কার এক ব্যক্তির জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যদিও তার চেয়ে ত্বকে হালকা।

তিনি বলেন, ‘এটি পূর্বের সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায় যে ইউরোপীয় শিকারি-সংগ্রাহকরা জেনেটিকভাবে একই রকম ছিল। বরং এতে বোঝা যায়, তাদের মধ্যে ত্বকের রঙের দিক থেকেও বৈচিত্র্য ছিল।’

মহিলা সম্প্রদায়ের দৈনন্দিন জীবনের একটি সম্ভাব্য দৃশ্যের পুনর্গঠন। ছবি- প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ

তিনি আরও জানান, খুলি বিশ্লেষণে বোঝা যায় এই নারীর বয়স ৩৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছিল। তার নাক ছিল উঁচু ধরণের এবং চোখের ওপরের হাড় কিছুটা মোটা—যা সাধারণত পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।

এই নারীর কঙ্কাল ১৯৮৮–৮৯ সালে বেলজিয়ামের দিনান্ত অঞ্চলের মারগো গুহায় খননের সময় পাওয়া যায়, যেখানে আরও আটজন নারীর দেহাবশেষও পাওয়া গিয়েছিল। এটি ছিল একটি বিরল ঘটনা, কারণ মেসোলিথিক যুগের বেশিরভাগ কবরস্থানে নারী-পুরুষ ও শিশুদের মিশ্র দেহাবশেষ মেলে।

ডে গ্রুট জানান, ওই কবরগুলোতে মরদেহের ওপর গেরুয়া রং ছিটানো ছিল, যা প্রতীকী বা আচারগত আচরণের ইঙ্গিত দেয়। বেশিরভাগ মরদেহকে পাথরের টুকরো দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। একটি দেহের খুলিতে মৃত্যুর পর কাটাছেঁড়ার চিহ্নও পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘গুহাটি কয়েকশ বছর ধরে বারবার ব্যবহার করা হয়েছে, যা বোঝায়—এটি ছিল স্মৃতির স্থান, যেখানে মানুষ বারবার ফিরে যেত, যদিও তারা ছিল যাযাবর জীবনধারার অনুসারী। এটি তখনকার সমাজ ও সংস্কৃতির জটিলতাকে তুলে ধরে।’

প্রকল্পের সদস্য আরেক প্রত্নতত্ত্ববিদ ফিলিপ ক্রম্বে বলেন, এই নারীর ত্বকের রং ছিল একটু ভিন্ন, যা আশ্চর্যজনক হলেও পশ্চিম ইউরোপে এত আগে বসবাসকারীদের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকাটাই স্বাভাবিক।

উন্মোচন অনুষ্ঠানের সময় পুনর্নির্মাণের ছবি। সৌজন্যে- ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ

তিনি বলেন, ‘সেই সময় ডিএনএ বিশ্লেষণের প্রযুক্তি ছিল না। এখন আমরা সেই পুরনো আবিষ্কারগুলো আধুনিক পদ্ধতিতে আবার বিশ্লেষণ করছি।’

এই নারীর খুলি থেকে পাওয়া ডিএনএ এত ভালো মানের ছিল যে, তা থেকে তার চোখ, চুল এবং ত্বকের রঙ পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, তার অলংকার বা ট্যাটুর মতো বিষয়গুলো আশেপাশের নদী-মেউজ এলাকায় পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্যের ভিত্তিতে কল্পনা করা হয়েছে।

এক খননে প্রাচীন একটি শিবিরে বিজ্ঞানীরা পাথরের হাতিয়ার, বন্য প্রাণীর হাড় ও মাছের চিহ্ন পেয়েছেন। এতে প্রমাণ মেলে যে, তারা ছিল পুরোপুরি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল যাযাবর—বন্য প্রাণী, উদ্ভিদ ও মাছের খোঁজে তারা এক জায়গা থেকে অন্যত্র যেত।

ক্রম্বে বলেন, এখন গবেষক দল ওই গুহায় একসঙ্গে দাফন করা ব্যক্তিদের মধ্যে সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করছে এবং তারা কী পরিমাণে মাছ খেতেন, তা নিয়েও গবেষণা চালানো হবে।

Link copied!