যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া–কায়বা সড়কটি দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকায় এখন চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ। বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে সড়ক আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন শার্শা ও পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হাজারো মানুষ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগআঁচড়া বাজার থেকে কবরস্থান, রাড়িপুকুর বটতলা হয়ে কায়বা ইউনিয়ন পরিষদ এবং বাদামতলা বাজার থেকে কায়বা বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত দীর্ঘ এই সড়কজুড়ে পথ যেন বিভীষিকা। গর্ত, কাদাপানি, ভাঙা পিচঢালা ও উঠে যাওয়া কার্পেটিংয়ে প্রতিটি যাতায়াত হয়ে উঠছে ভয়ংকর।
সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও রোগীবাহী যানবাহনের যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। কোনো রোগী অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
বাগআঁচড়া সিদ্দিকিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, ড. আফিলউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, চালিতাবিড়িয়া আর ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাইকোলা ওসমানিয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এই সড়কে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
কায়বা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিন ভাঙা রাস্তা পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসতে হয়। অনেকেই সময়মতো পৌঁছাতে পারে না।’
ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ির ঝাঁকুনিতে শরীরেই ব্যথা লাগে। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়, পড়াশোনাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
বাদামতলা বাজারের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় এত বড় গর্ত যে দেখে মনে হয় মাছ চাষ করা যায়! অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া দুঃসাধ্য।’
একজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, ‘আমি নিজেও দুর্ঘটনায় পড়েছি। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ জীবনের ঝুঁকিতে থাকবে। দ্রুত সংস্কার না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।’
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আরিফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত একটি প্রকল্প ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪৩৫ মিটার দীর্ঘ ও ৫.৫ মিটার প্রস্থের আরসিসি সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর ধাপে ধাপে পুরো সড়কটি উন্নয়ন ও মেরামত করা হবে।’
এই সড়ক সংস্কার না হলে এলাকার জীবনমান আরও অবনতির দিকে যাবে। স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমবে, কৃষিকাজ ও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, রোগী পরিবহন হয়ে উঠবে প্রাণহানির শঙ্কা।
আপনার মতামত লিখুন :