ঢাকা সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫

‘প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত কে কত ভালো কাজ করতে পারে’

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম
বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এস.এম. জিয়াউদ্দিন হায়দার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এস.এম. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত কে কত ভালো কাজ করতে পারে, কে কত উন্নয়ন করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘ঝালকাঠিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করে সবার অংশগ্রহণে উন্নয়নমূলক কাজ করা জরুরি।’

রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, ‘বিদেশে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ৩৫ বছর কাজ করার পরও তিনি দেশে ফিরেছেন শুধুমাত্র দেশের জন্য কিছু করার উদ্দেশ্যে। আমি চাইলে বিদেশে থেকে যেতে পারতাম। দেশের মানুষের জন্য কিছু ভালো করার ইচ্ছা আমাকে দেশে ফিরিয়েছে।’

তিনি জানান, বিএনপির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দিন থেকেই জনগণের সেবায় নিজেকে নিবেদিত করেছেন। দলের হাই কমান্ড যদি আমার কাজ বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেয়, আমি সেটা গ্রহণ করব। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যে দৌড়ঝাঁপ, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে শোডাউন—আমি তাতে বিশ্বাসী নই, মন্তব্য করেন তিনি।

ড. জিয়া বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহর পুড়িয়ে দিয়েছিল। আক্ষেপ করে বলেন, সেই পোড়া শহরই রয়ে গেছে। সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন হয়নি, বরং পিছিয়ে গেছে। তখনকার সময়ে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত এখনকার চেয়ে ভালো ছিল। অপরিকল্পিত কাজ এবং স্বদিচ্ছার অভাবে ঝালকাঠি অনেক পিছিয়ে গেছে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ঝালকাঠি একসময় ব্যবসা-বাণিজ্যের এপি সেন্টার (কেন্দ্রস্থল) ছিল, প্রেসক্লাব স্থাপিত হয়েছিল ১৯৬৫ সালে—যা তখনকার উন্নত অবকাঠামোর প্রমাণ। কিন্তু বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের অবস্থা শোচনীয়, অনেক কারিগর মাসে মাত্র দেড় হাজার টাকা আয় করেন।

ড. জিয়া হায়দার ঘোষণা দেন, ঝালকাঠি শহরকে মডেল টাউন গড়ে তোলা এবং হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের পুনরুজ্জীবনে কাজ করবেন তিনি। এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিনোদন অবকাঠামোর ঘাটতি পূরণে উদ্যোগ নেবেন।

তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ঝালকাঠির আলোচিত ধানসিঁড়ি ইকোপার্ক প্রকল্পের জমি উদ্ধার নিয়ে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ভূমিদস্যুদের হাত থেকে জমি উদ্ধার করে ইকোপার্ক বাস্তবায়ন করব, যাতে জনগণের সম্পদ জনগণের হাতে ফিরে আসে।

ড. জিয়া বলেন, সবাই দল-মত নির্বিশেষে একসঙ্গে কাজ করলে ঝালকাঠিকে একটি সুন্দর ও উন্নত জেলা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। সবকিছুর দায় সরকারের ওপর চাপানো উচিত নয়, জনগণেরও অনেক দায়িত্ব আছে।

ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে, এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আককাস সিকদার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান আনিস, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম আজীম, ঝালকাঠি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সদস্য জহিরুল ইসলাম জুয়েল, প্রেসক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক আ. স. ম. মাহমুদুর রহমান পারভেজ, একুশে টিভির জেলা প্রতিনিধি আজমীর হোসেন তালুকদার, যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি দুলাল সাহা, আইনজীবী সমিতির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট খান শহিদুল ইসলাম, ঝালকাঠি সিটি ক্লাব ও পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন পান্না, দৈনিক দূরযাত্রা পত্রিকার সম্পাদক জিয়াউল হাসান পলাশ, দৈনিক গাউছিয়া পত্রিকার সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দত্ত ও ব্যবসায়ী মির আহসান উদ্দিন পারভেজ।