ঢাকা সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫

১২০ বছর বয়সি স্কুলের নেই নিজস্ব জমি!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
১২০ বছর বয়সি স্কুলের নেই নিজস্ব জমি, অন্যের জমিতে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়শাশ ইউনিয়নের কুশাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ধোপাবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয় দুটিতে রয়েছে দুটি করে ভবন। ভবন থাকলেও বিদ্যালয় দুটির নেই নিজস্ব জমি। সরকারি খাসজমির ওপর নির্মিত ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। ১৯০৫ সালে স্থাপিত কুশাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির বয়স ১২০ বছর। অপরদিকে ধোপাবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে ১৯৪০ সালে। বিদ্যালয় দুটি ১৯৭৩ সালে সরকারিকরণ হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯০৫ সালে স্থাপিত কুশাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সে সময় সেতাব মুন্সি নামে স্থানীয় একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ১ একর জমি দান করেন। ৬০ এর দশকে এসে জমিটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসকের নামে খাস খতিয়ান হিসেবে রেকর্ড হয়। সেই থেকে এখন অবধি খাস খতিয়ানের অংশ হিসেবে রয়েছে। এর মধ্যে সেখানে স্থাপন করা হয়েছে ইউনিয়ন ভূমি অফিস। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৭৯ এবং শিক্ষক রয়েছেন সাতজন।

অপরদিকে ১৯৪০ সালে স্থাপিত ধোপাবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সে সময় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি গঙ্গাধর বিশ্বাস বিদ্যালয়টির জন্য ৩৩ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি দলিলে দান করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ৬০ এর দশকে জমিটি সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। সেই থেকে খাস খতিয়ানের অংশ জমিটি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৮৩ এবং শিক্ষক রয়েছেন ৯ জন।

কুমড়াবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. হানিফা খাতুন বলেন, জমিটি রেকর্ড সংশোধন করে বিদ্যালয়ের নামে প্রদান করার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

কুশাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসিত বিশ্বাস বলেন, কুশাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি শতবর্ষী বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি না থাকায় আমাদের শিশুদের খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের সামনে বড় একটি পুকুর। পুকুরটি ভরাট করে শিশুদের জন্য খেলার উপযোগী ও বিদ্যালয়ের নামে জমি প্রদান করার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা বলেন, কুশাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধোপাবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি নেই। পূর্ব তেঁতুলবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিসংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ের জমিসংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে বলে জানান তিনি।