ঢাকা শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫

সুদ না পাওয়ায় দাদন ব্যবসায়ীর ২০ লাখ টাকার মামলা

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
দাদন কারবারি নান্টু ওরফে সুজাউল ইসলাম

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় ৪ লাখ টাকার সুদ পাওনা নিয়ে ২০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করেছেন এক দাদন ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন পনুট বাজারসংলগ্ন কীটনাশক ও সার ব্যবসায়ী নান্টু ওরফে সুজাউল ইসলাম (৩৮), তিনি ওই এলাকার আব্দুল বারিকের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পনুট বাজার এলাকার নান্টু ওরফে সুজাউল ইসলামের সঙ্গে চাকলমুয়া নিমেরপাড়া গ্রামের রাকিবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে রাকিব ব্যবসায়িক প্রয়োজনে দুই কিস্তিতে নান্টুর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নেন, প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা সুদ দেওয়ার শর্তে।

প্রথম দিকে তিনি নিয়মিত সুদ পরিশোধ করলেও পরবর্তীতে আর দিতে না পারায় নান্টু মিয়া রাকিবের বাড়িতে গিয়ে এসি, ওয়াশিং মেশিন, এলইডি টিভিসহ বেশ কিছু আসবাবপত্র জোরপূর্বক নিয়ে যান বলে অভিযোগ।

ভুক্তভোগী রাকিব বলেন, “পনুট বাজারে ব্যবসার সুবাদে নান্টুর সঙ্গে পরিচয় হয়। তার কাছ থেকে দুই কিস্তিতে ৪ লাখ টাকা সুদে নিয়েছিলাম। এই টাকার বিপরীতে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা সুদও পরিশোধ করেছি। কিন্তু পরে আর দিতে না পারায় নান্টু আমার নামে ২০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করেন। এখন আমি ঘরছাড়া। আমি ন্যায়বিচার চাই।”

নান্টু মিয়া বলেন, “আমি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম, আরেক বন্ধুর কাছ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকাও সে নিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ টাকা নিয়েছে রাকিব। আমরা কয়েকজন মিলে আদালতে মামলা করেছি।” তবে তিনি কখনো বলেন ১১ লাখ, আবার কখনো ২০ লাখ টাকার দাবি করেন—ফলে তার বক্তব্যে অসঙ্গতি লক্ষ করা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই নান্টু ওরফে সুজাউল ইসলাম পনুট বাজার এলাকায় সুদের ব্যবসা (দাদন ব্যবসা) চালিয়ে আসছেন। অসহায় মানুষদের কাছ থেকে অতিরিক্ত সুদ আদায়ই তার মূল পেশা।

নিমেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহানারা বেগম ও ফজের আলী বলেন, “কিছুদিন আগে নান্টু লোকজন নিয়ে রাকিবের বাড়ি থেকে এসি, ওয়াশিং মেশিন ও টিভি নিয়ে যায়। সে এলাকায় সুদের ব্যবসা করে, ২ লাখ টাকা দিলে ৫ লাখ টাকার মামলা করে বসে। এটাই তার ব্যবসা।”

আসামি পক্ষের আইনজীবী উজ্জল জানান, রাকিবের নামে একটি চেকের মামলা হয়েছে। রাকিব জানিয়েছে তার সাথে প্রতারণা করে মামলা করা হয়েছে, যে মামলা করেছে সে টাকা পাবে না। তবে সম্পর্কের কারণে কিছু টাকা হাওলাত নিয়েছে এর পরে চেক নিয়ে মামলা করেছে।

স্থানীয়দের মতে, মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন, তবে এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।