ঢাকা বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫

‘লাল চন্দন’ ভেবে ভারত থেকে ভেসে আসা কাঠ বিক্রি লাখ টাকায়

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০১:৩৪ পিএম
উজানের ঢলে ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি। ছবি - সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার কালজানি নদীর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ভেসে এসেছে হাজারো গাছের গুঁড়ি। লালচে রঙের কারণে অনেকেই এগুলোকে ‘লাল চন্দন’ কাঠ মনে করে কেউ বিক্রি করছে লাখ টাকায়। 

রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেল থেকে শিলখুড়ি ইউনিয়নের ঢলডাঙা ও শালঝোড় এলাকায় কালজানি নদীতে গুঁড়িগুলো ভেসে আসতে দেখা যায়। সোমবার সকাল নাগাদ এসব কাঠ নদীর স্রোতে দুধকুমার হয়ে ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

নদীপাড়ের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে শত শত মানুষ নেমে পড়ে কাঠ ধরতে। কেউ নৌকা, কেউ ভেলা, কেউবা টিউব নিয়ে নদীতে নেমে কাঠ তুলছে। অনেক জায়গায় গড়ে উঠেছে অস্থায়ী কাঠের হাট।

নাগেশ্বরীর দামালগ্রাম এলাকায় দেখা গেছে, একেকটি গুঁড়ি ২০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রায়গঞ্জ ইউনিয়নে বড় লালচে গুঁড়ির দাম ধরা হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মোতালেব বলেন, চারজন মিলে প্রায় ৫০ ফুটের মতো একটি গাছ তুলেছি। দেখতে ঠিক চন্দনের মতো। দেড় লাখ টাকা দাম চেয়েছি, তবে এক লাখ ২০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করে দেব।

কাঠ ব্যবসায়ী আজাদ হোসেন জানান, একেকটা গুঁড়ি ১২ হাজার টাকায় কিনেছি। কেটে জ্বালানি কাঠ হিসেবে বিক্রি করবো।

ছিটমাইলানীর সবুজ মিয়া বলেন, পরিবারসহ সারারাত ধরে প্রায় ৫০০ মণ কাঠ তুলেছি। কিছু রাখবো রান্নার জন্য, বাকিটা বিক্রি করবো।

তবে বন বিভাগ বলছে, এসব কাঠ আসল চন্দন নয়।

কুড়িগ্রাম জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাদিকুর রহমান বলেন, এগুলো দীর্ঘদিন পানিতে থাকায় কাঠের রঙ লালচে হয়েছে। শ্বেত বা রক্তচন্দনের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উদ্ভিদবিদ মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন জানান, কাঠে থাকা ট্যানিন ও ফেনলিক যৌগ পানিতে ভিজে বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে জারিত হয়ে লালচে রঙ ধারণ করে। তাই দেখতে চন্দনের মতো হলেও এগুলো সাধারণ কাঠ।

তিনি আরও বলেন, চন্দন কাঠে বিশেষ ঘ্রাণ থাকে, যা ঘষলে বোঝা যায়। কিন্তু এসব কাঠে কোনো গন্ধ নেই, ফলে নিশ্চিতভাবে বলা যায় এগুলো চন্দন নয়।