কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভা কর্তৃক ইজারাকৃত সড়কের চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে পৌরসভার কাজীপাড়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের দুজন আহত হয়।
অপরদিকে এ নিয়ে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতরা হলেন কুমারখালী পৌরসভা জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক ও ইজারাদার রাকিব হোসেন (৪০)। তিনি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপরজনের নাম সাইফুল ইসলাম শোভন (৩০)। তিনি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের যুব জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইনের ছেলে। বর্তমানে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এক বছরের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পৌর এলাকায় যানবাহন চলাচল ও পার্কিংয়ের জন্য প্রায় ২১ লাখ ৬৪ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক রাকিব হোসেন। বুধবার বিকেলে যুব জামায়াত নেতা শোভনের এক অটোচালক বন্ধু কাজীপাড়া এলাকায় আসলে ইজারাদার রাকিবের সহকর্মীরা রশিদের মাধ্যমে ২০ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
এ সময় অটোচালক টাকা না দিয়ে শোভনকে ফোন দেন। শোভন তার লোকজন নিয়ে কাজীপাড়া আসলে ইজারাদার রাকিবের সমর্থকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সরেজমিন কাজীপাড়া মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন থানার ওসি। রাকিবের সমর্থকরা জড়ো হয়েছেন সেখানে।
এ সময় আহত রাকিবের সহপাঠী মো. বাপ্পী বলেন, প্রথমে জামায়াত নেতা আফজাল হোসাইনের ছেলে শোভন এসে রাকিবের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এরপর শোভন ফোন করে তার ৫-৭ জন লোক ডেকে আনেন। তাদের হাতে ধারালো বেকিসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র ছিল। ওরা এসে রাকিবকে কুপিয়ে দ্রুত চলে যায়।
অভিযোগ অস্বীকার করে যুব জামায়াত নেতা সাইফুল ইসলাম শোভন বলেন, ‘আমার বন্ধুর কাছ থেকে চাঁদা নিতে নিষেধ করায় রাকিবের লোকজন আমাদের মারধর করেছে। আমার হাত কেটে গেছে। ওদের কারা মারছে তা জানি না।’
উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান সবুজ বলেন, রাকিব বিএনপির লোক। পৌর জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক। রাকিবের মাথায় একাধিক কোপের চিহৃ রয়েছে। তাকে ওটিতে নেওয়া হচ্ছে। পরে কথা বলা যাবে।
উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, ‘আমার ছেলে মারামারি করা লোক নয়। কী ঘটেছিল তা বিস্তারিত জেনে পরে জানানো হবে।’
কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ইজারার টাকা তোলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।