বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাড়ছে দুর্ভোগ

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম

লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

টানা বর্ষণ এবং উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৩ মিটার, যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৮ সেন্টিমিটার ওপরে।

নদীপাড়ের মানুষ ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, চার দিনের ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সোমবার (১১ আগস্ট) রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে তা টানা তিন দিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নতুন নতুন এলাকা ডুবে গেছে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় ২৫ হাজার পরিবার।  

তিস্তার পানি বাড়ার ফলে লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী, আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্দ্ধন, বাহাদুরপাড়া, পলাশী এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

টানা তিন দিনের বন্যায় পানিবন্দি পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গবাদিপশু, বৃদ্ধ, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। চারপাশে শুধু পানি—বাড়ির ভেতরে বিছানার ওপর মাচা বানিয়ে গৃহিণীরা দিনে একবার রান্না করছেন, কেউ কেউ উঁচু রাস্তা বা বাঁধে চুলা বসিয়ে রান্না করছেন। বাঁধ ও রাস্তার ধারে পলিথিনের তাঁবু টাঙিয়ে রাখা হচ্ছে গবাদিপশুগুলোকে। সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনায় পড়েছেন নারীরা—পায়খানা ডুবে যাওয়ায় শৌচকর্মে সমস্যা হচ্ছে। প্রায় সব বাড়ির টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।

গোবর্দ্ধন গ্রামের এমদাদুল হক বলেন, তিন দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছি। চারদিকে শুধু পানি। উজানের ঢলে তিস্তা গর্জে উঠেছে, ভয়ংকর রূপ নিয়েছে নদী। নির্ঘুম রাত কাটছে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর। পানিতে সাপ ও পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে।

উত্তর ডাউয়াবাড়ী গ্রামের আকলিমা বেগম বলেন, ‘রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। আমাদের গ্রামের সব বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর পানি। রান্না, খাওয়া, থাকা, শৌচকর্ম—সবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রাতে ঘুমাতে পারিনি। বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি, কখন কে পানিতে পড়ে যায়!’

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, ‘বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বাড়ছে। তিন দিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তাপাড়ের নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হতে কিছুটা সময় লাগবে, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে পানি ১৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যায় কিছুটা কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) এইচএম রকিব হায়দার বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে কিছু শুকনো খাবার ও জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত বিতরণ করা হবে। আরও শুকনো খাবারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।

Link copied!