মানিকগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকা থেকে শিখা আক্তার (২৯) নামে এক নারী, তার ছেলে আরাফাত ইসলাম আলভি (৯) ও মেয়ে সাইফা আক্তারের (২) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে সন্তানদের বিষপান করিয়ে হত্যার পর শিখা আক্তার নিজেও বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা তিনটার দিকে ওই এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিখা আক্তার মালয়েশিয়া প্রবাসী দেওয়ান শাহীন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী। শাহীন আহমেদ মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আন্দারমানিক এলাকার আব্দুর রহমান দেওয়ানের ছেলে। আর নিহত আরাফাত ইসলাম আলভি মানিকগঞ্জের বেসরকারি শাহীন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইট ট্যাবলেটের একটি খালি কৌটা উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া আলমগীর বলেন, ‘সোমবার রাত ৯ টার দিকে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেওয়ার জন্য শিখার বাসার দরজায় নক করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। তিনি ভেবেছিলেন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার সকালে আবারও কল করলে সাড়া না পেয়ে বাড়িওয়ালাকে খবর দেন।’
বাড়ির মালিক মুক্তাদির বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত এসে ৯৯৯-এ ফোন দেন। পরে পুলিশ এসে পাশের বিল্ডিং থেকে জানালা দিয়ে ভেতরে তিনজনের মরদেহ দেখতে পায়। দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে খাটে শিখা আক্তারের মরদেহ এবং ফ্লোর থেকে ছেলে ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে।’
তিনি আরও জানান, গত মাসের ১৫-১৬ তারিখের দিকে শিখা আক্তার তার স্বামী শাহীন আহমেদকে নিয়ে ওই বাসায় ওঠেন। পরদিন শাহীন মালয়েশিয়া ফিরে যান। এরপর শিখা আক্তার বাসা ছেড়ে চলে যান। চলতি মাসের ৭-৮ তারিখের দিকে আবার তিনি সন্তানদের নিয়ে ওই বাসায় ওঠেন।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন বলেন, ‘নিহত শিখা আক্তার শাহীন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং শাহীন আহমেদও তার দ্বিতীয় স্বামী। ছেলে আরাফাত ইসলাম আলভি শিখার প্রথম স্বামীর সন্তান আর মেয়ে সাইফা আক্তার শাহীনের ঔরষজাত সন্তান।’
তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, শিখা আক্তার দুই সন্তানকে বিষপান করিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেছেন।’
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এসএম আমান উল্লাহ বলেন, ‘মা ও সন্তানসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।’