মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) ভাগ করে দুটি অধিদপ্তর করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের বিষয়ে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক ও কলেজ শিক্ষকদের বিপরীতমুখী অবস্থানে শিক্ষায় অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। কলেজ-শিক্ষকদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পেশাগত বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন মাধ্যমিকের শিক্ষকেরা। তাই আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মাধ্যমিকের স্বতন্ত্র অধিদপ্তর বাস্তবায়নে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা। এই শিক্ষকেরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। শুধু গেজেট প্রকাশ বাকি। কিন্তু একটি মহল তা আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে কলেজ শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে সরকারের একটি ক্যাডারের হীন স্বার্থে মাউশি ভাগের প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকেরা। মূলত এই ভাগের মাধ্যমে কলেজ অংশের শীর্ষ পদগুলোর নিয়ন্ত্রণ ওই ক্যাডার নিতে চাইছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। শিক্ষকেরা বলছেন, সাবেক আওয়ামী সরকারের সময় করা এই নীতি এই আমলে বাস্তবায়িত হলে শিক্ষায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এমন পরিকল্পনা কি নাÑ এমন প্রশ্নও তুলেছেন শিক্ষকেরা। প্রস্তাবের বিরোধিতায় এখনো কর্মসূচি দেননি এই শিক্ষকেরা। তবে সম্প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু অ্যাসোসিয়েশনের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন শিক্ষকেরা। এ বিষয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানাতে কর্মসূচি দেওয়ার জন্য অ্য্যাসোসিয়েশনের ওপর চাপ রয়েছে সাধারণ শিক্ষকদের। তবে মাউশি ভাগ হলেও এর পরিচালনার দায়িত্ব যাতে বর্তমানের মতো কলেজ-শিক্ষকদের হাতেই থাকেÑ এমন নিশ্চয়তা চান শিক্ষকেরা।
মাউশি ভাগের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টা সম্মতি দিয়েছেন বলে দাবি মাধ্যমিক শিক্ষকদের। অন্যদিকে কলেজ-শিক্ষকেরা বলছেন, তারাও শুনেছেন প্রধান উপদেষ্টা সম্মতি দিয়েছেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে তাদের কিছু বলছেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে মাধ্যমিক ১ (সরকারি মাধ্যমিক) শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বিদেশে থাকায় এ বিষয়ে ওই শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ইয়ানুর রহমান জানিয়েছেন, মাউশি ভাগের বিষয়ে এখনো কোনো ডকুমেন্টস পাননি।
বিভাজন কোনো সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন উভয় স্তরের শিক্ষকদের অভিভাবক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘বিভাজন সমাধান নয়, শিক্ষার মানোন্নয়নে আমরা কাজ করতে চাই। দেশের মানুষ তাদের সন্তানদের সুশিক্ষিত, সুনাগরিক এবং বিশ্বনাগরিক হিসেবে দেখতে চায়। আমরা ঐকবদ্ধভাবে তা করতে চাই।’
উত্তাপ ছড়িয়েছে মাউশি ভাগের প্রস্তাব:
বর্তমান মাউশিকে দুই ভাগ করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ ও ‘কলেজ শিক্ষা অধিদপ্তর’ নামে দুটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য গত ৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। দেশের মাধ্যমিক শিক্ষাকাঠামো ব্যবস্থাপনায় গতি আনার লক্ষ্যে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়।
সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির ২৭ অনুচ্ছেদে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের জন্য পৃথক অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ ছিল। সেই আলোকে মাধ্যমিক শাখার জন্য ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ এবং কলেজ পর্যায়ের জন্য ‘উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর’ করার কথা বলা হয়েছে। এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) আয়োজিত জাতীয় কর্মশালায় দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে বিআইএম ফাউন্ডেশন রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি সার্ভিস সেন্টার (বিএফআরসিএসসি) একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করে। মাউশির আওতায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর প্রত্যাশিত সেবা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও গতিশীল করতে ওই প্রতিবেদনেও সুপারিশ করা হয়।
এরও আগে ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সচিব কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই আলোকে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর সংস্কার পরিকল্পনা দাখিল করে। সেই পরিকল্পনায়ও মাউশিকে দুটি অধিদপ্তরে রূপান্তরের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ ছাড়া জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও মাউশি থেকে মাধ্যমিক বাদ দিয়ে কলেজ শিক্ষা অধিদপ্তর করার কথা বলা হয়েছে।
প্রস্তাবের পক্ষে মাঠে মাধ্যমিক শিক্ষকেরা :
নিজেদের পেশাগত নানা বঞ্চনার অভিযোগ করে বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষকেরা অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন সময় আবেদন-নিবেদন জানাচ্ছিলেন। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের মাউশি ভাগের প্রস্তাবের পর ৩০ সেপ্টেম্বরে ফের তা বাস্তবায়নসহ পাঁচ দাবিতে মাঠে নেমেছে মাধ্যমিকের শিক্ষকেরা। এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে আগামী ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সারা দেশের ৬৪ জেলায় সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের কর্মসূচি পালন করা হবে।
সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি এটি আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের আহ্বায়ক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ও নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রেবেকা সুলতানা, ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মজিদসহ শিক্ষক নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০০৩ ও ২০১০ শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিকের জন্য আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার সুপারিশ ছিল। গত ১৫ বছরে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। উল্টো কলেজভিত্তিক নীতির কারণে বঞ্চিত হতে হচ্ছে মাধ্যমিকের শিক্ষকদের। এ ছাড়া মাদ্রাসা ও কারিগরির জন্য আলাদা অধিদপ্তর রয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও শিক্ষা প্রশাসনের সংস্কার পরিকল্পনায়ও স্বতন্ত্র মাধ্যমিক অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে।
দাবিদাওয়া আগেও ছিল, কিন্তু মাউশি ভাগের প্রস্তাবের পরপরই তা বাস্তবায়নে শিক্ষকদের মাঠে নামার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক পদটি মাধ্যমিকের। আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রশাসনিক ও আয়ন-ব্যয়ন ক্ষমতা উপপরিচালকের। সম্প্রতি এই ক্ষমতা উপপরিচালক থেকে সরিয়ে কার্যালয়ের পরিচালকের কাছে (কলেজ) ন্যস্ত করা হয়। দীর্ঘদিনের মর্যাদা হারিয়ে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষকেরা। এ সময়ই মাউশি ভাগের প্রস্তাব আসে মন্ত্রণালয়ের। তাই এই সময়কেই নিজেদের দাবি আদায়ে উত্তম বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।
স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠাসহ শিক্ষকদের চারটি দাবি হলোÑ সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রি পদকে নবম গ্রেডে উন্নীতকরণ; কলেজের মতো একাডেমিক পদসোপান বাস্তবায়ন; আঞ্চলিক উপপরিচালকের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণ ও বিদ্যালয়ের পরিদর্শন শাখার সব শূন্য পদে পদোন্নতি ও পদায়ন এবং প্রায় ৬ হাজার শিক্ষকের বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল মঞ্জুরি।
মাধ্যমিক শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে গঠিত পরিষদের আহ্বায়ক ও ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময় বেসরকারি শিক্ষকদের দাবি মানা হয়েছে। আমরা এটিতে অনুপ্রাণিত হয়েছি।’ আন্দোলনের ডাকে সরকারি কর্মচারী বিধি লঙ্ঘন হয়েছে কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে ব্যাপারটি এমন নয়, শিক্ষক দিবসে বরাবরই আমাদের প্রোগ্রাম থাকে, এবার শুধু আমাদের দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন হবে। এতে বিধি লঙ্ঘন হয়নি।’ মাধ্যমিকের মতো উচ্চশিক্ষার কর্মচারীরাও যদি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মাঠে নামে, সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি জটিল হবে কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই তাদের মর্যাদা বাড়–ক, পাশাপাশি আমাদের দাবিও বাস্তবায়ন হোক।’ ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, ‘পেশাগতভাবে মাধ্যমিক শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত। এসব বঞ্চনা দূর হোক, পাশাপাশি কলেজের স্যাররাও যেন তাদের ন্যায্য দাবি বুঝে পান, সার্বিকভাবে এটিই আমাদের চাওয়া।’ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক রেবেকা সুলতানা বলেন, স্বতন্ত্র অধিদপ্তর হলে মাধ্যমিক শিক্ষায় গতি আসবে, পাশাপাশি শিক্ষকেরাও বঞ্চনা থেকে মুক্তি পাবেন।
জোরালো প্রতিবাদে কর্মসূচি চায় শিক্ষা ক্যাডার: মাউশি ভাগের প্রস্তাবে প্রচ- ক্ষোভ বিরাজ করছে শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের মধ্যে। তারা বলছেন, ইতিমধ্যে শিক্ষা ক্যাডার নানাভাবে তার মর্যাদা হারিয়েছে, এখন মাউশি ভাগে ক্ষতি হবে অপূরণীয়। ইতিপূর্বে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের শীর্ষ পদগুলো যেভাবে প্রশাসন ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণে গেছে, মাউশি ভাগ হলে প্রস্তাবিত কলেজ অধিদপ্তরের শীর্ষ পদগুলোও সেভাবে যাবে। অন্যদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকেও প্রাথমিক বই ছাপার দায়িত্ব নিতে চাইছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। পাশাপাশি শিক্ষা বোর্ডগুলোতেও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদ বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) ভেঙে দুটি আলাদা দপ্তর গঠনের প্রস্তাব করা হলেও ব্যয় সংকোচন নীতি ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের পেশাগত স্বার্থ রক্ষার তত্ত্বাবধান করে বিসিএস শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশন। অথচ মাউশি ভাগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অ্যাসোসিয়েশনের আগোচরে কীভাবে চলে গেল, তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না সদস্যরা। পাশাপাশি এটি প্রতিরোধে সমিতির কোনো জোরালো ভূমিকা না থাকায় প্রচ- ক্ষুব্ধ তারা। সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্টের পর সমিতির অধিকাংশ নেতা শিক্ষার বিভিন্ন অধিদপ্তর-দপ্তরের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পাওয়ায় সাধারণ সদস্যদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। নিজেদের পদ-পদবির ক্ষতি হবে এমন আশঙ্কায় তারা ন্যায়সংগত বিষয়েও জোরালো ভূমিকা নিতে পারছেন না। পাশাপাশি অ্যাসোসিয়েশনের কিছু নেতার এ বিষয়ে ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ ভূমিকাও দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সদস্যরা। শিক্ষা ক্যাডারকে বাঁচাতে অবিলম্বে এ বিষয়ে সমিতির জোরালো প্রতিবাদ কর্মসূচি দিয়ে মাঠে দেখতে চান সদস্যরা।
ক্যাডারের স্বার্থবিরোধী নানা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মসূচি দিতে সমিতির ওপর সদস্যদের ব্যাপক চাপের কথা স্বীকার করেন অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ও মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘ক্যাডার সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে সত্যি, তবে আমরা যেহেতু সরকারি কর্মচারী, তাই সব দিক বিবেচনায় নিতে হয়।’
এই কর্মকর্তা আরও জানান, শিক্ষকদের অসন্তোষ সম্পর্কে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারকে জানানো হয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টা বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে পদক্ষেপ নেবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেছেন। শিক্ষার মূল অংশীজন শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এই প্রস্তাবে নানা প্রশ্ন উঠেছে মন্তব্য করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
ক্যাডার সদস্যদের স্বার্থ সংরক্ষণে সমিতির কার্যকর ভূমিকার অনুপস্থিতিতে একসময় গড়ে ওঠা ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা মর্যাদা রক্ষা কমিটি’র আহ্বায়ক কামাল আহমেদ বলেন, ‘ক্যাডারের মর্যাদা সত্যিকারভাবেই এখন বিপন্ন। এর জন্য সবাইকে দায় নিতে হবে।’ হঠাৎ করে এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আয়োজন সরকারকে বিপদে ফেলার পরিকল্পনা কি না, সেটাও ভেবে দেখা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। মাধ্যমিক আলাদা হোক অসুবিধা নেই, কিন্তু মাধ্যমিক অধিদপ্তর শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের দিয়েই চালাতে হবে। কারণ ক্যাডার কর্মকর্তারাই এটি চালাচ্ছেন, তারাই বিষয়টি ভালো বুঝবেন।’