ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শ্রমিকদের দাবি মেনে আবারও উৎপাদনে ফিরছে উত্তরা ইপিজেড

মো. নাঈম শাহ্, নীলফামারী
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ১০:২৫ পিএম
নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

শ্রমিকদের ২৩ দফা দাবি মেনে নিয়ে দুই দিন পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে উৎপাদনে ফিরছে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড। তবে আন্দোলনের সূত্রধর এভারগ্রিন প্রোডাক্ট (বিডি) লি. কারখানাটি খুলবে আগামী শনিবার।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা ৩০ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, কারখানা কর্তৃপক্ষ, বেপজা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতিতে বৈঠক শেষে নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ সিকদার এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘উত্তরা ইপিজেডের অন্যান্য কারখানা বৃহস্পতিবার থেকে খোলা হবে এবং শ্রমিকরা স্বাভাবিকভাবে কাজে যোগ দেবেন। এভারগ্রিন কারখানাটি শনিবার থেকে খুলবে এবং শ্রমিকরা পুনরায় কাজে যোগ দেবেন।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের অধিকাংশ দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে এবং এ বিষয় নিয়ে বেপজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এভারগ্রিন কোম্পানির একটি লিখিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।’

হাবিব নামে একজন শ্রমিক নিহত হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। নিহত শ্রমিকের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং যারা আহত, তাদের চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোম্পানি আইন অনুযায়ী নিহত ও আহত শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করবে।’

জেলা জজ কোর্টের জিপি আবু মো. সোয়েম বলেন, ‘এভারগ্রিন কারখানার শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে বেপজা কর্তৃপক্ষ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবে। চুক্তি অনুযায়ী শ্রমিকদের অন্যায়ভাবে ছাঁটাই, বেতন কাটা বা চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।’

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির খায়রুল আনাম বলেন, ‘দীর্ঘ সময়ের সভায় সব পয়েন্টের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বেপজা কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ প্রদানে আশ্বস্ত করেছে।’

এর আগে গত তিন দিন ধরে এভারগ্রিন বিডি কারখানার শ্রমিকরা ২৩ দফা দাবিতে আন্দোলন করছিল। গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে কারখানা কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করেন।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে অন্যান্য শ্রমিকদের কাজ করতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ, সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত আট শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন এবং হাবিব নামে এক শ্রমিক মারা যান। উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেপজা কর্তৃপক্ষ ইপিজেডের সকল কারখানা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে।

ওই ঘটনায় বেপজা নির্বাহী পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার এ. এফ. এম. তারিক হোসেন খান জানান, নিহত হাবিবের পরিবার কোনো দাবি জানায়নি। পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।