ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

পাবনায় বালুমহাল দখলে ফের ফিল্মি স্টাইলে গুলি, রাখাল আহত

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম
ঈশ্বরদীতে নৌকা থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছে; আরেক পাশে আহত রাখাল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পাবনার ঈশ্বরদীতে বালুমহাল দখলকে কেন্দ্র করে আবারও ফিল্মি স্টাইলে গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নাটোরের লালপুরের ‘কাকন বাহিনী’র বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোহান হোসেন (২৮) নামে এক রাখাল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

শনিবার (১২ জুলাই) সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের সাড়া ও ইসলামপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ সোহান ঈশ্বরদীর মাজদিয়া চৌধুরীপাড়ার সাহাবউদ্দিন মোল্লার ছেলে। তাকে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও বালু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবনার ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও দৌলতপুর এবং নাটোরের লালপুর এলাকায় বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করে ‘কাকন বাহিনী’ নামে পরিচিত একটি সন্ত্রাসী চক্র। অধিকাংশ ঘাট দখলে নিলেও ঈশ্বরদীর সাড়াঘাট সরকার-নিয়োজিত ইজারাদারের অধীনে থাকায় তা এখনও তারা দখলে নিতে পারেনি।

এর আগে গত ৫ জুন কাকন বাহিনী সাড়াঘাটে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ করে। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ঘটনার পর তারা কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকলেও শনিবার সকালে আবারও স্পিডবোট ও নৌকাযোগে এসে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ঘাস কাটছিলেন রাখাল সোহান। তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

ঘটনার পর থেকেই এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঈশ্বরদী থানার এসআই (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। একজন রাখাল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে এখনও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।’

সরকার অনুমোদিত সাড়াঘাট ইজারাদার মেহেদী হাসান ও টনি বিশ্বাস বলেন, ‘নাটোরের আওয়ামী লীগ নেতা কাকন ও ঈশ্বরদীর যুবলীগ নেতা মিলন চৌধুরী সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যবহার করে বৈধ-অবৈধ সব বালুমহাল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। আমরা বৈধভাবে সরকারের রাজস্ব পরিশোধ করে বালু ব্যবসা করছি। কিন্তু তারা আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করছেন। এতে রাজি না হওয়ায় বারবার আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা কাকন ও যুবলীগ নেতা মিলন চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।