পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মো. আব্দুর রহমান আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের ক্যাশিয়ার হিসাবেই এলাকায় বেশি পরিচিত। তার বাবা জসিমউদ্দীন একসময় বোদা সরকারি খাদ্য গুদামের মাস্টাররোলে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তখন তার পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা ছিল। কিন্তু বর্তমানে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক।
এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক সময় বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ আসা চাল-গমের ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) কিনে নিতেন। প্রায় অর্ধেক মূল্যে প্রকল্পের চাল-গম কিনে বেশি দামে বিক্রি করতেন। এই ব্যবসার জন্য তিনি বোদা বাজারের মনবি সিনেমাহল রোডে প্রকাশ্যেই গদিঘর খুলে বসেন। প্রকল্পের চাল-গম বিক্রির জন্য দাদন হিসাবে বিভিন্ন ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আগাম টাকা প্রদানও করতেন রহমান।
এ জন্য এলাকায় তাকে ‘ডিও ব্যবসায়ী রহমান’ নামেই ডাকতেন। এই ডিও ব্যবসা করেই আব্দুর রহমান এখন বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক। পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক এমপি নূরুল ইসলাম সুজনের আশীর্বাদ ও ছত্রছায়ায় আব্দুর রহমান ‘ডিও ব্যবসা’ পরিচালনা করতেন।
নূরুল ইসলাম সুজন রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর তার ব্যবসায় আয়-উন্নতি দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে। এই টাকার জোরে আব্দুর রহমান বিনা ভোটে পরপর দু’বার জেলা পরিষদের কাউন্সিল নির্বাচিত হন। এরপর শুরু করেন নামে-বেনামে ঠিকাদারি ব্যবসা। এভাবে অল্প সময়েই আব্দুর রহমান বনে যায় বিপুল বিত্ত ভৈববের মালিক। তিনি বোদা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে কিনেছেন প্রায় শতাধিক বিঘা জমি। অথচ তার দৃশ্যমান বা বৈধ কোনো ব্যবসা কখনই ছিল না। প্রকল্পের চাল-গম কেনাবেচাই ছিল তার একমাত্র পেশা।
এদিকে জুলাই-বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গাঢাকা দিলেও আব্দুর রহমান এখনো এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে হেন কোনো অপকর্ম নেই, যা তিনি করেননি।
অন্যদিকে তার বিরূদ্বে অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ দোসর হয়েও চলতি বছর ৪০ লাখ টাকা খরচ করে বোদা পৌরসভার অন্তর্গত নগর কুমারী হাটের ইজারা বাগিয়ে নিয়েছেন আব্দুর রহমান।
এ বিষয়ে আব্দুর রহমান তার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব ভিত্তিহীন ও মিথ্যা প্রচারণা মাত্র।
বোদা থানার ওসি আজিমউদ্দীন বলেন, আবদুর রহমানের নামে কোনো মামলা নাই। তা ছাড়া বর্তমানে তিনি ‘একটিভ’ নন, এ জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :