শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম

এসএসসি পাস করলো ১২ অনাথ কিশোর

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম

আহছানিয়া মিশন শিশু নগরী’তে বেড়ে ওঠা ১২ অনাথ কিশোর।     ছবি- সংগৃহীত

আহছানিয়া মিশন শিশু নগরী’তে বেড়ে ওঠা ১২ অনাথ কিশোর। ছবি- সংগৃহীত

ছোটবেলায় কেউ হারিয়েছেন বাবা, কেউ মা। কেউ আবার অবুঝ বয়সেই হারিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয় পরিবার থেকে। পরিবারহীন এমন ১২ কিশোর এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে দেখালেন, সাহস আর সুযোগ থাকলে জীবনের অন্ধকার পথও আলোয় ভরে উঠতে পারে।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ‘আহছানিয়া মিশন শিশু নগরী’তে বেড়ে ওঠা এসব কিশোররা এবার পঞ্চগড় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কারও জিপিএ ৪.৯৬, কারও ৪.৮২, কেউবা পেয়েছেন ৪.৫৪-তবে তাদের চোখেমুখে একই রকম উচ্ছ্বাস ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন।

এসএসসি পাস করা ১২ কিশোর হলো-কবির হোসেন হৃদয়, সাব্বির হোসেন, সফিকুল ইসলাম, পারভেজ রানা, আব্দুল মজিদ, সুজন আলী, রাকিবুল হাসান, বরজুল রহমান বায়েজিদ, তাপস চন্দ্র রায়, জিহাদ মিয়া, আল আমিন ও হৃদয় কুমার।

এসএসসিতে জিপিএ ৪.৯৬ পাওয়া কবির হোসেন হৃদয় জানান, ‘খুব ছোটবেলায় মা–বাবার বিচ্ছেদ হয়। ৫ বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে রেলস্টেশনে চলে যাই। পথশিশু হয়ে জীবন কাটছিল। ২০১৪ সালে সমাজকর্মীদের মাধ্যমে এখানে আশ্রয় পাই। এখন আমার শুধু এটুকু মনে আছে-আমার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে।’

জিপিএ ৪.৫৪ পাওয়া আব্দুল মজিদ জানান, ‘বাবাকে ছোটবেলায় হারাই। আমার বাড়ি দিনাজপুরে। এখানেই বড় হয়েছি, পড়াশোনা করেছি। এখন পাস করেছি-স্বপ্নের মতো লাগছে।’

পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৭৫ পাওয়া সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমি খুব ছোটবেলায় পরিবার থেকে নিখোঁজ হই। নিজের জেলার নামও মনে নেই। শুধু মনে আছে, বাবার নাম মারুফ, মায়ের নাম ছবি আক্তার।’

আরেক কিশোর আব্দুল মজিদ (জিপিএ ৪.৮২) জানান, ‘আমার আসল বাড়ি লালমনিরহাটের তুষভান্ডারে। ছোটবেলায় হারিয়ে যাই। পরে পরিবার পাওয়া গেলেও এখানেই থেকে যাই। এই জায়গাটাই আমার নিজের হয়ে গেছে।’

২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই শিশুনগরী অনাথ, ছিন্নমূল ও হারিয়ে যাওয়া শিশুদের আশ্রয় ও নতুন জীবনের পথ দেখাচ্ছে। এখানকার শিশুদের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নিজস্বভাবে পড়ানো হয়, এরপর স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে মাধ্যমিক পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া হয়।

শিশু নগরীর সমাজকর্মী ইউসুফ জানান, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে পথশিশু বা অনাথ শিশুদের এখানে এনে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরে তাদের পড়াশোনা, জীবন গড়ার সুযোগ দেওয়া হয়।’

কৃষি কর্মকর্তা সেলিম প্রধান বলেন, ‘শিশুরা এখানে পরিবারের মতোই থাকে। ১৮ বছর পূর্ণ হলে তাদেরকে কর্মমুখী শিক্ষা দিয়ে কর্মসংস্থানেও সহায়তা করা হয়।’

শিশু নগরীর সেন্টার ম্যানেজার দিপক কুমার রায় বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া শিশুদের আলোর পথে ফিরিয়ে আনে। বর্তমানে এখানে প্রায় ১৬০ জন শিশু রয়েছে। এবার ১২ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং সবাই পাস করেছে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!