পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানায় ট্যুরিস্ট পরিচয়ে অটোচালককে ছুরিকাঘাত ও অটোগাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আন্তঃজেলা ছিনতাইচক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় অভিযুক্তদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত চারটি বোরাক অটোগাড়ি উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) পুলিশ কর্তৃক প্রদানকৃত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৩টায় পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামের নতুন বাজার বেড়িবাঁধ এলাকায় ট্যুরিস্ট পরিচয়ে অটোগাড়ি ডেকে নিয়ে চালক মো. মুছাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে ব্যাটারি চালিত অটোগাড়ি ছিনতাই করে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ভিকটিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ঘটনায় মহিপুর থানায় গত ১ ডিসেম্বর পেনাল কোডের ৩৯৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার পটুয়াখালীর নির্দেশনায় মহিপুর থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একাধিক দল তদন্তে মাঠে নামে। ঘটনাস্থলসহ বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মূল আসামিদের শনাক্ত করা হয়।
পরে ২ ডিসেম্বর পটুয়াখালী জেলা ও বরিশালের বিভিন্ন এলাকা থেকে যৌথ অভিযানে সাতজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— পটুয়াখালীর মহিপুরের মো. নাসির হাওলাদার (৩৯) ও মো. শাহীন হাওলাদার (২২), আমতলী থানার মো. জাকির হোসেন গাজী (৪৫), পটুয়াখালী সদরের মো. জসিম হাওলাদার (৩৮) ও আবুল বাশার (৩৫), জেলার দুমকি উপজেলার মো. রাহাত হাওলাদার (২৭) এবং বরিশালেন বাকেরগঞ্জের মো. লিটন আকন (৫৭)।
অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাহাত হাওলাদারের বাড়ির আঙিনা থেকে বিভিন্ন সময়ে ছিনতাই করা মোট চারটি অটোগাড়ি উদ্ধার করা হয়।
ভিকটিম মো. মুছা জানান, তার বড় ভাইয়ের বোরাক অটোগাড়িটি তিনি মাঝে মাঝে চালাতেন। গত ৩০ নভেম্বর সকাল থেকে এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় কুয়াকাটা চৌরাস্তায় অবস্থানকালে একজন ট্যুরিস্ট পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে পরদিন ভোরে সূর্যোদয় স্পটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পৌঁছালে কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে অটোগাড়ি ছিনতাই করে নেয়।
তদন্তে জানা গেছে, আসামিরা অটোগাড়ি ছিনতাই করে তা পরিবর্তন, মডিফাই ও রং পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্রেতা সংগ্রহ করে বিক্রি করত। তারা আন্তঃজেলা ছিনতাইচক্রের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় এমন অপরাধে জড়িত।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে মো. নাসির হাওলাদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং ছিনতাইচক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা যাচাইয়ের কাজ চলছে। এই অপরাধে যারা সম্পৃক্ত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



