ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

স্কুলের তালা ভেঙে প্রাথমিকের পরীক্ষা নিলেন ইউএনও

শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৬:০৩ পিএম
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনীষা আহমেদ প্রাথমিকের পরীক্ষা নিচ্ছেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনে থাকায় তালা ভেঙে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনীষা আহমেদ। 

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাইরে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীবরদী উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নূরন নবীসহ অনেকে।

জানা গেছে, শেরপুর জেলার ৭৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বুধবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন এবং বৃহস্পতিবারও তা অব্যাহত রেখেছেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে—সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা, শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন কার্যকর করা, টাইমস্কেল-সিলেকশন গ্রেডের বকেয়া পরিশোধ এবং আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের অগ্রিম বেতন সুবিধা পুনর্বহাল। শিক্ষকদের এমন হঠাৎ কর্মবিরতি ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

অভিভাবক হালিম মিয়া বলেন, ‘হুটহাট করে শিক্ষকরা পরীক্ষা বন্ধ করবে—এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলনে শিশুরা মানসিক চাপে পড়ে। শিক্ষকরা মানুষ তৈরির কারিগর বলা হলেও পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চলতে পারে, এটা উচিত নয়।’

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

আরেক অভিভাবক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমি বলব এটা আন্দোলন না, এটা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা। সরকারকে কঠোর হতে হবে। কিছু হলেই আন্দোলন—তা ঠিক নয়। এমন অবস্থা চলতে থাকলে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়াও প্রয়োজন হতে পারে। পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করা—এটা কেমন আন্দোলন, আপনারাই বলুন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনীষা আহমেদ বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জরুরি নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফিরতে বলেছে। একই সঙ্গে শাটডাউন বা কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ারও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা না নিয়ে আন্দোলন করছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।