ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত যেকোনো সংক্রামক রোগ শিশুদের শরীরে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে, এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। এসব রোগ থেকে সুরক্ষার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো টিকা গ্রহণ। টিকা শুধু রোগ প্রতিরোধ করে না, এটি সুস্থ ও সক্ষম ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনে ভূমিকা রাখে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বিভাগীয় পর্যায়ের পরামর্শমূলক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান এসব কথা বলেন।
মহাপরিচালক বলেন, ‘টিকা গ্রহণের মাধ্যমে আজকের শিশু হবে ভবিষ্যতের সুস্থ নাগরিক।’ তিনি আরও বলেন, ‘টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম সফল করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকরা জনগণের কাছে সবচেয়ে দ্রুত ও কার্যকরভাবে তথ্য পৌঁছে দিতে পারেন। তাই টিকাদান নিয়ে বিভ্রান্তি ও গুজব দূর করতে গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে।’
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের দায়িত্ব শিশু-কিশোরদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে তাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সুস্থ ও সক্ষম প্রজন্ম গঠনে রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।’ তিনি সাংবাদিকদের আহ্বান জানান, গুজব মোকাবিলা করে ইতিবাচক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে এ উদ্যোগকে সফল করে তুলতে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. আনিসুর রহমান, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন এবং ইউনিসেফের সিলেট অঞ্চলের প্রধান কাজী দিল আফরোজ ইসলাম। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার।
উন্মুক্ত আলোচনায় সাংবাদিকরা টাইফয়েড টিকা নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, গুজব প্রতিরোধ, টিকা নিবন্ধন প্রক্রিয়া ও প্রচারণা কৌশল বিষয়ে মতামত দেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশনে স্কুল পর্যায়ে ৬৭ দশমিক ০২ শতাংশ শিশুকে টিকাদানের আওতায় আনা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগে স্কুল পর্যায়ে ৫৭ শতাংশ শিশু এবং স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায় মিলিয়ে মোট ৩৭ শতাংশ শিশুকে ইতোমধ্যে টিকাদান করা হয়েছে। পুরো বিভাগে প্রায় ৩০ লাখ শিশুকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।