ঢাকা সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

আজ নজরুলের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৪:২০ পিএম
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি- সংগৃহীত

আজ ২৫শে মে, আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মদিন। প্রতি বছর এই দিনটি বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে পালন করে। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণকারী এই কিংববদিন্ত পুরুষ তার অনবদ্য সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের শিল্প-সংস্কৃতিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছেন।

নজরুল ছিলেন একাধারে বিদ্রোহী ও প্রেমের কবি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তার লেখনী ছিল এক শাণিত তলোয়ারের মতো। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মাধ্যমে তিনি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শিখিয়েছেন।

আবার অন্যদিকে, তার অসংখ্য গানে ও কবিতায় প্রেম ও ভালোবাসার এক অপূর্ব প্রকাশ ঘটেছে। তার রোমান্টিক গানগুলো আজও বাঙালির হৃদয়ে দোলা দেয়।

নজরুল তার সাহিত্যে সাম্য ও মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তিনি ধনী-গরীব, হিন্দু-মুসলমান, উঁচু-নিচু ভেদাভেদ ভুলে এক শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছেন। তার গানে ও কবিতায় বারবার উঠে এসেছে বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের কথা। ‘মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু-মুসলমান’ -এই পংক্তিটি তার অসাম্প্রদায়িক চেতনারই প্রতিচ্ছবি।

নজরুল কেবল একজন কবিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ সুরকার ও সঙ্গীতশিল্পী। বাংলা গানে তার অবদান অনস্বীকার্য। হাজার হাজার গান রচনা করেছেন তিনি, যার মধ্যে রয়েছে গজল, ঠুমরি, কীর্তন, শ্যামাসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান ও আধুনিক গান। তার গানগুলো আজও বাঙালির সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।

তিনি এখন আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার সৃষ্টিকর্ম আজও আমাদের পথ দেখায়। তার সাহিত্য আজও আমাদের সমাজের নানা অসঙ্গতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শেখায়। সাম্প্রদায়িকতা, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত এক সুন্দর সমাজের স্বপ্ন আজও তার সাহিত্যের মাধ্যমে আমাদের অনুপ্রাণিত করে।

কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় জীবনে এক চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার জন্মদিন শুধু একটি দিবস নয়, এটি এক উৎসব, এক নতুন করে জেগে ওঠার দিন।