ঢাকা সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রবাসীদের ‘রেমিট্যান্স ঝড়’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ১১:০৪ পিএম
ছবি-সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহা সন্নিকটে। এই ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তাই পরিবার-পরিজনের জন্য বাড়তি খরচের জোগান দিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছেন, যা দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করেছে।

রোববার (২৫ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি মে মাসের প্রথম ২৪ দিনেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ২২৫ কোটি মার্কিন ডলার। বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা) অনুযায়ী, এই অঙ্ক বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকারও বেশি।

উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, গত বছর পুরো মে মাসে (৩১ দিনে) প্রবাসীরা একই পরিমাণ ২২৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সাধারণত কোরবানির পশু কেনা, নতুন পোশাক, উপহার ও পারিবারিক ব্যয়ের জন্য প্রবাসীরা বেশি অর্থ পাঠান।

ফলে এ সময় রেমিট্যান্স প্রবাহে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ব্যাংক কর্মকর্তাদের আশা, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে মে মাস শেষে প্রবাসী আয়ের নতুন রেকর্ড তৈরি হতে পারে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ কেবল প্রবাসী পরিবারের আয় বাড়ায় না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখে। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ অর্থনীতি যেমন চাঙা হয়, তেমনি নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যেও গতি আসে।

সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে। ডিজিটাল চ্যানেলে অর্থ পাঠানো সহজ হওয়ায় এখন অনেকেই হুন্ডি এড়িয়ে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল বেছে নিচ্ছেন, যা রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের প্রথম ২৪ দিনে মোট ২২৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।

বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার এবং এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

অর্থাৎ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা আট মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি এবং মার্চ মাসে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫-এর জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।