ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

বাড়তি শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদেরই দিতে হবে : বিজিএমইএ সভাপতি

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নিয়ে গত তিন মাস ধরে তৈরি পোশাক খাত এক ধরনের অনিশ্চয়তায় ছিল। মার্কিন ক্রেতারাও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) এক লিখিত বিবৃতিতে বিজিএমইএ সভাপতি এই মন্তব্য করেন। মাহমুদ হাসান স্পষ্ট করে বলেছেন, এই বাড়তি শুল্ক পোশাক রপ্তানিকারকদের নয়, বরং আমদানিকারক ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকেই বহন করতে হবে।

তিনি বলেন, শুরু থেকেই আমরা বলছিলাম, প্রতিযোগী দেশের তুলনায় আমাদের ওপর পাল্টা শুল্ক বেশি থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকা কঠিন হবে। এখন পাকিস্তানের তুলনায় আমাদের শুল্ক ১ শতাংশ বেশি হলেও, ভারতের চেয়ে ৫ শতাংশ ও চীনের চেয়ে ১০ শতাংশ কম। যা আমাদের জন্য ইতিবাচক।

তবে বাড়তি শুল্কের প্রভাবে অস্থায়ীভাবে ব্যবসায় কিছুটা ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। কারণ, মার্কিন ক্রেতাদের পণ্যে বাড়তি শুল্ক দিতে হবে, যা তাদের মূলধনে চাপ ফেলবে। অতিরিক্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে না পারলে তারা ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিতে পারে।

এছাড়া, শেষ পর্যন্ত এই বাড়তি খরচ ভোক্তার উপরেই বর্তাবে, যা বাজারে পণ্যের দাম বাড়াবে এবং বিক্রি কমাতে পারে।

তিনি আরও জানান, গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের সব দেশের পণ্যের উপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। তখন কিছু মার্কিন ক্রেতা সেই শুল্ক নিজেরা বহন করলেও, কেউ কেউ সরবরাহকারীদের উপরও চাপ দিয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই অতিরিক্ত শুল্ক সরবরাহকারী বা রপ্তানিকারকদের নয়, বরং আমদানিকারক ও মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকেই বহন করতে হবে। শেষ পর্যন্ত এর প্রভাব মার্কিন ভোক্তার উপর গিয়ে পড়বে এই বার্তা স্পষ্ট রাখতে হবে।

চীনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো দেশটির পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বলবৎ রয়েছে এবং শিগগিরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাদের চূড়ান্ত হার ঘোষণা করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের শুল্কহার বাংলাদেশের তুলনায় কম হবে না। ফলে চীনের অর্ডার অন্য দেশে সরতে থাকবে, যা বাংলাদেশের জন্য সুযোগ তৈরি করবে।

তবে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশেষ করে, চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি সরবরাহ, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতেই হবে।

সর্বশেষে তিনি বলেন, পাল্টা শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশ যে প্রতিশ্রুতি ও চুক্তিগুলো করেছে। মন গম, তুলা, এলএনজি কেনা বা উড়োজাহাজ কেনার মতো স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। গুলো বাস্তবায়নে গাফিলতি হলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং এসব প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে রক্ষা করা জরুরি।