শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ১১:৪২ এএম

পোশাকবিধি নিয়ে সমালোচনা, নির্দেশনা প্রত্যাহার করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ১১:৪২ এএম

পোশাকবিধি নিয়ে সমালোচনা, নির্দেশনা প্রত্যাহার করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন পোশাকবিধি জারির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

কেউ কেউ একে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখলেও অনেকে একে স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং লিঙ্গবৈষম্যের নজির বলেও মন্তব্য করছেন।

এরই মধ্যে পোশাক সংক্রান্ত নির্দেশনাটি প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নির্দেশনা মোতাবেক বিষয়টি প্রত্যাহার করা হয়।

ব্যাংক সূত্র জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অফিস সময়ে পেশাদার ও মার্জিত পোশাক পরিধানের পরামর্শ প্রদানের বিষয়ে স্ব স্ব বিভাগীয় সভায় আলোচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

তবে এ বিষয়ে কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি এবং এ সংক্রান্ত কোনো সার্কুলারও জারি করা হয়নি। মিডিয়ার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ বিষয়টি বিদেশে অবস্থানরত গভর্নরের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার নির্দেশনা মোতাবেক বিষয়টি এ মুহূর্তে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এর আগে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। তোফায়েল খান নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘খুবই ভালো সিদ্ধান্ত।’ অন্যদিকে আশা জাহিদ নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের হাজারটা কাজ ফেলে এখন কী পোশাক পরবে, সেটা ঠিক করা নাকি জরুরি?’

শরিফুল হাসান লিখেছেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনের পোশাক ঠিক করে না দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ, তবে অফিসে শালীন পোশাকের পরামর্শ ভালো উদ্যোগ।’ সাদ রহমান লিখেছেন, ‘এ ধরনের নির্দেশনা শুধু মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনই নয়, বরং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে লিঙ্গবৈষম্য প্রতিষ্ঠা করে।’

সমালোচনার মধ্যেই বুধবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পোশাকবিধির সার্কুলারটি একটি পরামর্শমূলক নির্দেশনা।’

তিনি জানান, বিভিন্ন বয়সী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে পোশাকের বৈচিত্র্য এবং মানসিক দূরত্ব কমিয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই সার্কুলারটি জারি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এতে বোরকা বা হিজাব পরিধানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, বরং অতিরিক্ত কারুকাজযুক্ত পোশাক নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এর ফলে অফিসে কারো পোশাকের স্বাধীনতা খর্ব হবে না।’

এদিকে, সোমবার (২১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ থেকে জারি করা অফিস নির্দেশনা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ ২-এর (বেনিফিটস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন উইং) একটি বিভাগীয় মাসিক সভার অ্যাজেন্ডা ও কার্যবিবরণীতে নিয়মিত অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেসব সিদ্ধান্তের একটি ছিল পোশাক নিয়ে।
 
গৃহীত সিদ্ধান্তের ১১ (ঘ) নম্বরে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের (সি ও ডি শ্রেণিভুক্ত কর্মচারীদের নির্ধারিত পোশাক ব্যতীত) সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পেশাদার ও মার্জিত পোশাক পরিধান করতে হবে। যেমন- পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ফরমাল শার্ট, লম্বা হাতা বা হাফ হাতা, ফরমাল প্যান্ট, ফরমাল জুতা পরতে হবে। জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরিহার করতে হবে।

নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বলা হয়, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না, অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক অবশ্যই সাদামাটা এবং পেশাদার রঙের হতে হবে। ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা, সাদামাটা হেডস্কার্ফ বা হিজাব হতে হবে। শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস (ছোট হাতা ও দৈর্ঘ্যের পোশাক), লেগিংস পরিহার করতে হবে।
 
১১ ক্রমিক নম্বরে আরও তিনটি নির্দেশনা রয়েছে। ১১ (ক) নম্বরে নারী কর্মীদের প্রতি আচরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশন ২০০৩-এর ৩৯ ধারায় বর্ণিত নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। যৌন হয়রানিসংক্রান্ত অভিযোগগুলো ঘটনা ঘটার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মানবসম্পদ বিভাগ ১–এর নির্দিষ্ট পরিপত্রের মাধ্যমে গঠিত কমিটির কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।


 
১১ (খ) নম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে মানবসম্পদ বিভাগ ২-এর অফিস নির্দেশ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
 
১১ (গ) নম্বরে ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরি করার জন্য দাফতরিক শিষ্টাচার ও আচরণবিধি তথা সততা, নৈতিকতা, সময়ানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, অর্পিত দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে নিষ্ঠা ইত্যাদি, সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ ও আন্তরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক (পারস্পরিক সম্মান, সৌজন্যবোধ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি) মেনে চলতে বলা হয়েছে।


 
সিদ্ধান্তের ১২ নম্বরে বলা হয়েছে, ১১ নম্বর ক্রমিকে দেয়া নির্দেশনা পরিপালনের জন্য অফিস, বিভাগ, প্রকল্প, সেল, ইউনিটভিত্তিক পর্যবেক্ষণের জন্য একজন কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দিতে হবে। ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি করবেন মনোনীত কর্মকর্তা। এর ব্যত্যয় হলে বিভাগীয় প্রধানকে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নির্দেশনা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে অভিযোগ পাঠাবেন।

Shera Lather
Link copied!