ছোট উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন নীতিমালা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে স্বীকৃত বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ছোট আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। এর বিপরীতে নগদ অর্থ, অগ্রিম বা ডকুমেন্টের মাধ্যমে বৈদেশিক দায় পরিশোধ করা যাবে।
রোববার (১৩ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনাটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রচলিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির আলোকে ব্যাংকগুলোকে ক্ষুদ্র আমদানিকারকদের সহায়তা করতে হবে। এতদিন প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণে সীমাবদ্ধতা থাকায় অনেক ছোট ব্যবসায়ী লেনদেন নিষ্পত্তি করতে পারতেন না। নীতিমালা শিথিল হওয়ায় এখন তারা স্বাচ্ছন্দ্যে বৈদেশিক বাণিজ্য করতে পারবেন।
সার্কুলারে ব্যাংকগুলোকে তাদের সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের এই পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
অর্থবছর ২০২৫-২৬-এর প্রথম ছয় মাসে ৪৩ ধরনের পণ্য রপ্তানির বিপরীতে আগের মতোই ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা পাবে রপ্তানিকারকরা। ভর্তুকির হার অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে জারি করা সার্কুলারে জানানো হয়, ১ জুলাই থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে আগের হারেই সহায়তা দেওয়া হবে। এই সহায়তার পরিমাণ সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত।
তৈরি পোশাক খাত: দেশি সুতা দিয়ে তৈরি পোশাকে ৫.৯ শতাংশ প্রণোদনা, চামড়াজাত পণ্য: সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ, ফিনিশড লেদারে ৬ শতাংশ, কৃষিপণ্য (প্রক্রিয়াজাত): ১০ শতাংশ, পাটপণ্য: বৈচিত্র্যময় পণ্যে ১০ শতাংশ, পাটজাত পণ্যে ৫ শতাংশ, পাট সুতায় ৩ শতাংশ, হালকা প্রকৌশল পণ্য: ১০ শতাংশ, ওষুধের কাঁচামাল: ৫ শতাংশ, বাইসাইকেল রপ্তানি: ৩ শতাংশ, আসবাবপণ্য রপ্তানি: ৮ শতাংশ।
এছাড়া, হিমায়িত চিংড়ি, ইলেকট্রনিকস, জাহাজ, মোটরসাইকেল, হাতে তৈরি হস্তশিল্প, গবাদিপশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, ঝুট, কাঁকড়া-কুঁচে, আগর ও আতর এসব ক্ষেত্রেও প্রণোদনা আগের হারেই বহাল থাকবে।
নগদ সহায়তা পেতে হলে রপ্তানিকারকদের অনুমোদিত বহিঃনিরীক্ষক বা অডিট ফার্মের মাধ্যমে নিরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন ব্যতিরেকে কোনো প্রতিষ্ঠান নগদ সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতবারের মতোই সহায়তা চালু রাখা হয়েছে। গত বছরের সংশোধিত হারে বর্তমানে নগদ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :