জাবির নতুন উপাচার্যের প্রতি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

রিপন বারী, জাবি

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম

জাবির নতুন উপাচার্যের প্রতি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

ছবি রুপালী বাংলাদেশ

শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন দিয়ে শুরু এবং পরবর্তীতে ছাত্র জনতার ১ দফা দাবিতে সরকার পতনের ডাক। যা ৫ ই আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ ঘটায়। এরপরই রাষ্ট্র কাঠামোর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া শুরু করেন। সেখানে বাদ যায়নি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ- উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদে বহাল থাকা ব্যক্তিরা। এ পর্যন্ত ২০ টিরও অধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম ৭ ই আগস্ট পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন । সেই সাথে উপ- উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন। এমতাবস্থায় ভেঙ্গে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো পুর্নগঠন করতে নতুন উপাচার্যের নিয়োগ দিবেন রাষ্টপতি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা কেমন উপাচার্য চান এবং তিনি কি ধরনের কাজ করবেন তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছে রুপালী বাংলাদেশ।


সরকার ও রাজনীতি বিভাগের (৫১ ব্যাচ) শামীম আফজাল শিক্ষার্থী জানান, 
একটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ হলো সে রাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সেখান থেকে দেশের নাগরিকরা সর্বোচ্চ লেভেলের বিদ্যা অজর্ন করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তার যে মূল দায়িত্ব দেশের নাগরিককে সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলা সেটা থেকে দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছে বিভিন্ন কারণে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে তার মূল দায়িত্বে ফিরে আনার জন্য নতুন ভিসি স্যারের কাছে আমার কিছু দাবি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত আবাসিক প্রতিষ্ঠান। যা কিনা নিজের নিয়ম-কানুন নিজেই তৈরি করে এবং তা প্রয়োগ করে। তাই আমি বলবো প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসন ফিরে আনতে হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর কোনো শক্তিধর রাষ্ট্রীয় অন্য প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির হস্তক্ষেপ থাকবে না। যেটা এর আগে আমরা লক্ষ করেছি। ছাত্র এবং শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এই রাজনীতির কারনে বিশ্ববিদ্যালয় তার মূল দায়িত্ব থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চালিকাশক্তি হলো শিক্ষক। তারা যদি অস্বচ্ছতা (লোবিং) এর মাধ্যমে নিয়োগ হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর আসল শিক্ষা থাকে না। তাই শিক্ষক নিয়োগে যোগ্য প্রার্থী এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরার জন্য ছাত্র সংসদ (জাকসু) চালু করতে হবে। যেহেতু সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় তাই সকল শিক্ষার্থীদের জন্য হলে সিঙ্গেল সিট নিশ্চিত করতে হবে এবং যে শিক্ষার্থীর একাডেমিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে তাদের হল থেকে বের করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি উন্মুক্ত জায়গা, যেটা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলে। তাদের অধিকার আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের।কিন্তু তারা যখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তখন আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার পরিবেশ বিনষ্ট হয়।তাই অনুমতি ব্যতীত বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের ২৪ ঘন্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পুরো ক্যাম্পাস কে সিসিটিভির আওতায় আনতে হবে। রাতে পুরো ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোর পাশে লাইটিং নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসের ভিতরের রাস্তাগুলোর সংস্কার করতে হবে।

ছাত্র-ছাত্রীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। এটা তার সাংবিধানিক অধিকার। ক্লাস,পরিক্ষা, ভাইভাসহ যে কোন জায়গায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এরকম অপরাধ কেউ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ইতিপূর্বে অনেক শিক্ষকের নামে বিভিন্ন সময় ধর্মীয় পোষাকের কারণে হেনস্তা করার নজির রয়েছে। স্বাধীনতার নামে ক্যাম্পাসে অশ্লিলতা বন্ধ করতে হবে। প্রতিটা হলের ৯০%+ ছাত্র মুসলিম। তাদের নামাজের জন্য মসজিদ রয়েছে। কিন্তু কোনো হলে ইমাম/মুয়াজ্জিন নিয়োগ ছাড়াই চলতেছে। আবার কোনো মসজিদে ইমাম/মুয়াজ্জিন এর পদই এখনো সৃষ্টি করা হয় নাই। এ বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে। মুক্তমঞ্চকে সকল প্রকার সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। ক্যাম্পাসের ভিতরের দোকান গুলোতে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে এবং হোটোলের খাবারের মান এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমাদের নতুন ভিসি স্যার এসকল দিকে নজর দিলে বিশ্ববিদ্যালয় তার আসল রুপে ফিরে আসবে বলে আমি মনে করি।

শাহরিন সুলতানা শিমু, ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী (৫০ ব্যাচ) বলেন, 
নতুন উপাচার্যের কাছে আমার দাবিগুলো হলো ১. মাষ্টারপ্ল্যান করে নতুন ভবন তৈরি করার উদ্যোগ নিতে হবে, অবাধ বৃক্ষ নিধন চলবেনা। ২. যেসব জায়গায় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে নতুন করব বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নিতে হবে। ৩. যেসব বিভাগের পর্যাপ্ত ক্লাসরুম নাই অতিদ্রুত ক্লাসরুম সংকট কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ৪. দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। ৫. সরকারবান্ধব ভিসি না হয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব ভিসি হতে হবে।

গণস্বাস্থ্য ও তথ্য বিভাগের (৫০ ব্যাচ) শিক্ষার্থী দেবেশ পাল বলেন, 
আমাদের নতুন উপাচার্য নিয়ে আমার প্রত্যাশা,,, ১. গবেষণা বান্ধব হতে হবে। ২. কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে কোনরকম সম্পর্ক থাকবে না। ৩. সর্বোপরি, শিক্ষার্থী বান্ধব হতে হবে।

মার্যিউর রহমান চৌধুরী, লোক প্রাশাসন বিভাগ (৫০ ব্যাচ) বলেন যে, 
প্রথমত,এমন একজন ভিসি চাই যিনি শিক্ষার্থী-বান্ধব এবং জুলাই গণ অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং গণ অভ্যুত্থানের পক্ষের লোক। দায়িত্ব নিয়ে প্রথমেই তিনি ক্যাম্পাসের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনবেন। গণ অভ্যুত্থানের পর থেকে ক্যাম্পাসের নিরাপদ ব্যবস্থা একভাবে ভেঙে পরেছে সেটা তিনি দ্রুত ঢেলে সাজাবেন। ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণা যাতে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ হয়ে উঠে। তাছাড়া যাতে অতি শীঘ্রই যাতে তিনি একটু তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন। যাতে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত ছাত্র এবং শিক্ষকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা যায়। আমরা যেন জুলাইয়ের স্পিরিটটা আমাদের ভিসির মধ্যে দেখতে চাই। ক্যাম্পাস যেন ছাত্র এবং শিক্ষকের হয়ে উঠে।

এছাড়াও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের (৫০ ব্যাচ) শিক্ষার্থী আব্দুল গণি জানান, 
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও একাডেমিক ঐতিহ্যে ভাস্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বর্তমানে একটি বিশেষ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। গত কয়েক বছরে এখানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ও প্রশাসনিক বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশসহ সার্বিক পরিস্থিতির অনেকটা অবনতি হয়েছে। উপরন্তু, কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও অনৈতিক পক্ষপাতিত্ব শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। এসব কিছুর প্রেক্ষিতে, সাধারন শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য পদত্যাগকৃত ভিসির জায়গা পূরণ করতে অতিসত্তর নতুন ভিসি নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই নিয়োগ কেবল একটি পদে নিয়োগ নয়, বরং এটি হতে হবে জাবির ভবিষ্যত পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। নতুন ভিসি থেকে শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজন কী প্রত্যাশা করেন তা নিয়ে আমার কিছু ভাবনা- প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান, কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন নয়। আগের প্রশাসনের সময়ে আমরা দেখেছি, কীভাবে রাজনৈতিক প্রভাবশালী সিদ্ধান্তগুলোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে। লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির জন্য সাধারন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে থাকাসহ আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। তাই নতুন ভিসির কাছ থেকে অন্যতম একটি প্রত্যাশা হলো এমন একটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ক্যাম্পাসের, যেখানে শিক্ষার্থীদের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। এখানে প্রশাসন কখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে কোনো রাজনৈতিক চাপের কাছে নত হবে না এবং শিক্ষার মূল লক্ষ্য থেকে কখনও বিচ্যুত হবে না।

ক্যাম্পাসকে যেন কখনও রাজনৈতিক কৌশল বা ফায়দার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা না যায়, সে ব্যাপারেও তিনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। দ্বিতীয়ত, জাহাঙ্গীরনগরের দীর্ঘদিনের সমস্যা হলো প্রশাসনিক দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি। আগের একাধিক ভিসির সময় দেখা গেছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে আর্থিক ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রেই অনিয়ম এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ রয়েছে। তাই নতুন ভিসির অধীনে এমন একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন চাই, যেখানে প্রশাসনিক কাজে শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো গোপনীয়তা থাকবে না এবং সিদ্ধান্তগুলো যুক্তিনির্ভর ও শিক্ষার্থীবান্ধব হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের জন্য একটি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক নীতি প্রণয়ন করা যেতে পারে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনের কাছে ভিসি ও প্রশাসনের জবাবদিহিতা থাকবে। ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিটি নিয়োগ ও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে যেন যোগ্যতা ও মেধা অগ্রাধিকার পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ক্যাম্পাসের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের মতামত ও অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিতে হবে।

তৃতীয়ত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এখনও আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। ডিজিটাল যুগে এখনো আমরা ফি দেওয়ার জন্য ব্যাংকের লাইনে দাঁড়াই; কোনো অনলাইন পোর্টাল নেই যেখানে আমরা আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমগুলো সহজে সম্পন্ন করতে পারি। তাই নতুন ভিসি মহোদয়ের অধীনে, একটি আধুনিক ও ডিজিটাল ক্যাম্পাস গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন যাতে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন, এবং অন্যান্য আধুনিক সুবিধার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও সহজ ও প্রবেশযোগ্য করা যায়। চতুর্থত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য মেধাবী শিক্ষার্থী এবং গবেষক তৈরি করা অপরিহার্য। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি বন্ধ করে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত তহবিল বরাদ্দ, এবং গবেষণায় সাফল্যের স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে গবেষণার একটি শক্তিশালী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার মানোন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নতুন ভিসি মহোদয়ের অন্যতম দায়িত্ব হওয়া উচিত। পঞ্চমত, শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি, ক্রীড়া, এবং অন্যান্য সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের প্রত্যাশা, নতুন ভিসি মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সাথে সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমের সমন্বয় করে একটি সমৃদ্ধ পরিবেশ তৈরি করবেন যেখানে শিক্ষার্থীরা মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যৌক্তিক অনুষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করার সুযোগ পাবেন। পরিশেষে, বিগত প্রশাসনের উদাসীনতা এবং দূরত্বের কারণে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে বিশ্বাসের সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা প্রায়ই প্রশাসনিক অবহেলার শিকার হয়েছি। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসির নিয়োগ কেবল একটি প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়; এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যতের পথে একটি নতুন সূচনা। আমরা এমন একজন অভিভাবক প্রত্যাশা করি, যিনি শিক্ষার মানোন্নয়ন, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নিবেদিত থাকবেন। জাহাঙ্গীরনগরকে একটি প্রকৃত শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে, যেখানে জ্ঞান ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে, সেখানে আমরা চাই নতুন ভিসি মহোদয় হবেন আমাদের সেই পথপ্রদর্শক, যিনি সততা ও দূরদর্শিতার আলোকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবেন।
 

আরবি

Link copied!